সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লটারি শেষে ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার বিকাল ৫টার পর থেকে ফল পেতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
আগেরবারের মত এবারও লটারির মাধ্যমে সরকারি বিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।
এদিন বিকালে ঢাকার সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রমের ডিজিটাল লটারির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ফেইসবুক পেইজ থেকে লটারির কার্যক্রম লাইভ করা হয়।
বেলা দুইটায় লটারির ফল প্রকাশের কথা থাকলেও বিকাল চারটার পরে লটারির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) মহানগরী ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি বিকাল ৩টায় হওয়ার সূচি রয়েছে। এ লটারিও হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে।
এবার দেশের ৫৪০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯০টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করেছে মোট ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৩ জন শিক্ষার্থী।
ভর্তির নির্ধারিত ওয়েবসাইটে https://gsa.teletalk.com.bd ইউজার আইডি দিয়ে এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।
লটারির উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ও শিক্ষার্থীদের সুযোগের সমতা আনতেই ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে স্কুলে ভর্তি করানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। শুধু পরিবর্তন নয়, রূপান্তরের একটি অংশ হিসেবে আমরা প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শুরু করেছি।
“আমরা সুযোগের সমতা আনতে চাই। অনেকগুলো সমস্যা রয়েছে ভর্তি ও ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে। সেই সমস্যা দূর করতে আমরা এটা করেছি। এটা খুবই কার্যকর।”
ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কেউ কেউ এর সমালোচনাও করেছেন। কোনো কোনো অভিভাবক আকুতিও করেছেন। একজন অভিভাবক রিট পিটিশন দায়েরও করেছেন। কিন্তু সেটা খারিজ হয়ে গেছে।
“কারণ আমরা মহামান্য আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি এর ইতিবাচক দিকগুলো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধার সমতা, ভর্তি বাণিজ্য দূর করা, তদবির বন্ধ, শিশুদের পড়াশুনার চাপ কমানো, পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ, যে কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই ডিজিটাল লটারিতে ভর্তি।”
বেসরকারি স্কুলে আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আবেদন কম পড়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “সব শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাবে। আগে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কোমলমতি শিশুদের ভর্তিযুদ্ধে লিপ্ত হত। অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যি দিয়ে এই শিশুদের যেতে হত।
“এই বিদ্যালয়ে পড়তে না পারলে সে ভালো নয়, তাকে দিয়ে কিছু হবে না। তার মনের মধ্যে কত ধরনের ভয়-ভীতি হতাশা ঢুকিয়ে দেওয়া হত। সেটা থেকে পরিত্রাণের প্রয়োজন। সেজন্যই এই পদ্ধতি। আর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নেয়, তাহলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কী করে? তার কৃতিত্বটা কোথায়? আমরা চাই সব স্কুলে ভাল পড়াশুনা হোক।”
আগামী বছর থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা চাপমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
লটারির ফল জানা যাবে যেভাবে
ভর্তির নির্ধারিত ওয়েবসাইটে https://gsa.teletalk.com.bd ইউজার আইডি দিয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারির ফল জানা যাবে।
এছাড়াও এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। ফল জানতে যে কোনো টেলিটক মোবাইল নম্বরের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে GSA লিখে স্পেস দিয়ে RESULT লিখে স্পেস দিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর ইউজার আইডি লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানা যাবে।