ওই অঞ্চলে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ ঘটনায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার কাজে জাতিসংঘকে যেন আমন্ত্রণ জানানো হয়, সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
Published : 15 Oct 2024, 11:57 PM
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেপ্টেম্বরের সহিংসতার ঘটনায় নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকার বিষয়ক দুই বিশেষজ্ঞ।
সোমবার এক বিবৃতিতে আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামের চেয়ারপার্সন হিন্ডু ওমারু ইব্রাহিম ও আদিবাসী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হোসে ফ্রান্সিসকো কালি যাই-এর এমন আহ্বান জানানোর কথা তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সহিংস ও নির্বিচার আক্রমণ থেকে জুম্ম জনগণকে রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণে এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে অপরাধীদের বিচার করার জন্য একটি নিরপেক্ষ কমিশন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক পার্মানেন্ট ফোরাম এবং আদিবাসী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।”
‘পাহাড়ি-বাঙালি’ সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও রাঙামাটিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পরে। তাতে চারজনের মৃত্যু ঘটে, পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কিছু ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ওই অঞ্চলে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ ঘটনায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার কাজে জাতিসংঘকে যেন আমন্ত্রণ জানানো হয়, সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘ক্রমবর্ধমান সহিংসতার’ খবরে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক পার্মানেন্ট ফোরামের চেয়ারপার্সন ও আদিবাসী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগে প্রকাশ করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পার্মানেন্ট ফোরামের অধিবেশনগুলোতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘আদিবাসী জুম্ম জনগণ ও বাঙালি দখলদারদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার’ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
“দশকের পর দশক জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও প্রান্তিকীরণের শিকার হওয়া জুম্ম জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপকতর বৈষম্য এবং প্রান্তিকীকরণের পটভূমিতে ঘটেছে সাম্প্রতিক সহিংসতা।”
মানবাধিকারের নীতি মেনে ফেইসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে আদিবাসী জুম্ম জনগণকে নিয়ে ‘বিদ্বেষ ও ভুল তথ্য’ ছড়ানো থেকে বিরত রাখার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের আদিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণার আলোকে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরাম এবং আদিবাসী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।
বিশেষ করে ওই ঘোষণার সপ্তম অনুচ্ছেদের বিধান অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা, যেখানে বলা হয়েছে, আদিবাসীদের স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী হিসাবে স্বাধীনভাবে শান্তি ও নিরাপদে একত্রে বসবাসের অধিকার রয়েছে এবং তারা গণহত্যা বা অন্য কোনো সহিংসতার শিকার হবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে।