প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, ছাত্র নেতাসহ সবার কাছে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন।”
Published : 04 Dec 2024, 04:51 PM
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বুধবার বিকাল ৪টায় এই সংলাপ শুরু হয়েছে।
সংলাপে অংশ নেওয়া বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তার সঙ্গে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আর আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে রয়েছেন নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম।
এছাড়া লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি(এলডিপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(জেএসডি), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(বাংলাদেশ জাসদ), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি),বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট(এনডিএম) বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি(বিজেপি),বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি(এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ(জিওপি) নেতারাও সংলাপে যোগ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দেশের চলমান নানা বিষয় নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
“চলমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, ছাত্র নেতাসহ সবার কাছে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন।”
মঙ্গলবার সংলাপের অংশ হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর পর বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গেও বসবেন প্রধান উপদেষ্টা।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা ৫ অগাস্ট ভারতে চলে যাওয়ার পর দেশের দায়িত্ব নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তখন থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে বেশ সরব ভূমিকায় রয়েছে ভারতের গণমাধ্যম; যাকে ‘অতিরঞ্জিত’ এবং ‘সংঘবদ্ধ অপপ্রচার’ হিসাবে বর্ণনা করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।
সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে দুদেশের সরকারের মধ্যে কয়েকবার বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সংখ্যালঘুদের আট দফা দাবি আদায়ে মাঠে নামা সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরো বেড়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন নাকচের দিন তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা করা হলে, সেই ঘটনার জন্য ইসকনকে দায়ী করে বক্তব্য দেয় বিভিন্ন দল, সেই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকেও দায়ী করা হয়।
এর মধ্যে সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন কার্যালয়ে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা হয়, যাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত হিসেবে বর্ণনা করে ‘ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে সংলাপ শুরু করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।