এনবিআরের আয়কর বিভাগের (ট্যাক্স লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আদালতে যায় দুদক।
Published : 27 Jun 2024, 11:38 PM
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া এক কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের সন্ধান নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে সরকারি সংস্থাটির আরেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
কমিশনের আবেদনের পর এনবিআরের আয়কর বিভাগের (ট্যাক্স লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ও তার স্ত্রীর নামে-বেনামে থাকা সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন সরকারি সংস্থাটির আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী টিমের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান এই আবেদন করেন আদালতে।
তিনি এনবিআরের অতিরিক্ত কর কমিশনার কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিগণের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয় বা মালিকানা সত্ত্ব বদল রোধের জন্য ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকে রক্ষিত সঞ্চয়পত্র ও নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের আমানতসমূহ থেকে অর্থ উত্তোলন অবরুদ্ধ এবং স্থাবর সম্পদ জব্দের আবেদন করেন।
পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন।
পরে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ ১৪ জনের ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ছয় কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে।
পাশাপাশি ফয়সালসহ সাতজনের নামে থাকা ১৫টি সঞ্চয়পত্রে থাকা দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়। ফয়সালের স্ত্রী আফসানাসহ চারজনের নামে থাকা স্থাবর সম্পদও জব্দ করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে বলা হয়েছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল তার নিজ নামে ও তার স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে জলসিড়ি আবাসন প্রকল্পে মোট দুই কোটি ৩৫ লাখ ৬৫হাজার টাকা পরিশোধ করে ৫ কাঠার প্লট কিনেছিলেন।
অনুসন্ধান চলাকালে তারা জলসিড়ি আবাসন প্রকল্পের প্লট বিক্রয় করেছেন। আরও সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছে দুদক। এরপরই এই আবেদন করা হয়।
দুদক মনে করছে, এসব সম্পত্তি তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন এবং সেগুলো ‘অপরাধলব্ধ’ কর্মের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।
এর আগে এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সবার নামেই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির সন্ধান মেলে।
এরপর এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে মতিউর রহমানকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সোনালী ব্যাংকে পরিচালকের পদও হারিয়েছেন তিনি।
মতিউর লাপাত্তা হয়ে গেছেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তিনি দেশ ছেড়েছেন, তবে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে মতিউর ও তার পরিবারের সব বিও হিসাব অবরুদ্ধ এবং তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।