“এতদিন সবাই বলত দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে কাজ দেওয়া হয় না। এবার আমরা বাপেক্সকে সর্বশক্তি দিয়ে কাজে লাগাব”, বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা।
Published : 03 Oct 2024, 11:53 PM
কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্র এড়িয়ে সরাসরি গ্যাসকূপ খননের কাজ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। দেশীয় খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, “২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫০টি কূপ খননের পরিকল্পনায় রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫টি খনন করা হয়েছে এবং সেখান থেকে প্রতিদিন ১৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মিলেছে। তবে পাইপলাইন না থাকায় জাতীয় গ্রিডে এখন ৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট দেওয়া হচ্ছে।”
২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫টি কূপ খনন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এর মধ্যে ১১টি কূপ খনন করবে বাপেক্স, বাকি ২৪টি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হবে।
“এখন থেকে জিটুজি (সরকার টু সরকার) করা হবে না, প্রতিযোগিতা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কারণ, দেখা গেছে আগে জিটুজি ভিত্তিকে কূপ খনন করতে গিয়ে দেশের মানুষ প্রকৃত ভ্যালু পায়নি।”
ফাওজুল কবির বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে আরো ১০০টি কূপ খনন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্থলভাগের ৬৯টি কূপে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হবে।
এর মধ্যে ৩৩টি কূপে অনুসন্ধান করবে বাপেক্স। আরও ১০টি রিগ ভাড়ার মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হবে। বাকি ২৬টি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে করা হবে।
এতে গ্যাস সংকট অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশাবাদী তিনি। বলেন, “এখন থেকে কোনো প্রকল্পের সময় ও অর্থ আর বাড়ানো হবে না।”
উপদেষ্টা বলেন, “এতদিন সবাই বলত দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে কাজ দেওয়া হয় না। এবার আমরা বাপেক্সকে সর্বশক্তি দিয়ে কাজে লাগাব।”
এলএনজি আমদানিকে ব্যয়বহুল বলেও মনে করেন ফাওজুল। বলেন, “এক কার্গো এলএনজি আনতে যে ব্যয় হয় সেটা দিয়ে দুই থেকে তিনটা কূপ খনন করা যায়।
“অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধান কাজ জোরদার করব। গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের টেন্ডার হয়ে গেছে। ডিসেম্বরে সেটা উন্মুক্ত করা হবে। সাতটি কোম্পানি সেখানে আগ্রহ দেখিয়েছে।”
ব্রিফিংয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মো. নূরুল আলমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এ সময় বলেন, ৫০টি কূপের মধ্যে ১৯টির দরপত্র নথিপত্র প্রস্তুত করা আছে। মন্ত্রণালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত নথিও জমা দেওয়া আছে।
মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আশা করে তিনি বলেন, “আশা করছি সেটা আগামী সপ্তাহেই পেয়ে যাব। তারপরের এক সপ্তাহের মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
“প্রথম ধাপে যেই ১৯টি কূপ খননের টেন্ডার দেওয়া হবে, এর মধ্যে একটি তেল কূপও রয়েছে। সেই কূপে তেল পাওয়া গেলে আরও ৩ থেকে ৫টি তেলকূপ খননের সম্ভাবনা তৈরি হবে।”