প্রকশনায় চৌর্যবৃত্তির অপরাধে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় নাসির উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
Published : 11 Aug 2024, 06:54 PM
প্রকাশনা জালিয়াতির অভিযোগে চাকরিচ্যুতির দীর্ঘ ছয় বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমদকে স্বপদে পুণর্বহাল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ক্ষমতার পালাবদলে সরকার ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিতে পরিবর্তনের ধারায় বিভিন্ন অভিযোগে আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি হারানো অনেকে নিজেদের দায়িত্বে ফিরছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নাসির উদ্দিন তার চাকরি ফিরে পেলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব নাসির উদ্দিন আহমদ-এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের রিপোর্ট সাপেক্ষে আজ (১১ অগাস্ট) হইতে ইংরেজি বিভগে তাকে পুনর্বহাল করা হল।”
এ বিষয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, “অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে এটা বিলম্ব না হলে আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর আগেই আমার চাকরিতে যোগদান করার কথা। আমার সামাজিক অবস্থানের কারণে আমাকে হেয় করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রদের কাছ থেকে আলাদা করতে পারেনি।”
উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে নাসির স্যারকে অপসারণ করাটা অন্যায় হয়েছিল। তিনি তার মর্যাদা ফিরে পেয়েছেন। আমাদের এখানে এখনও প্ল্যাজিয়ারিজম নীতিমালা নেই।”
গত বছরের ১৭ অগাস্ট নাসির উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এই রায় দেয়।
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অপরাধে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় নাসির উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ১৫ মার্চ সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেন, যার সঙ্গে দুটি গবেষণাপত্র জমা দেন তিনি। পরে নিয়োগ বোর্ড গবেষণাপত্র দুটির বেশিরভাগ অংশ অন্য গবেষণা থেকে ‘নকল’ করা হয়েছে বলে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করে।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথের সেই সময়ের সিন্ডিকেট সদস্য এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওই কমিটি টার্নিটিন সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেখতে পায়, তার একটি আর্টিকেলে (গবেষণাপত্র) ৮১ শতাংশ এবং অন্যটিতে ৫২ শতাংশ কপি করা হয়েছে। পরে আরও একটি কমিটি গঠন করার পর ওই কমিটি আরেকটি প্রতিবেদন জমা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট নাসির উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করে।
কিন্তু নাসির উদ্দিন তখন দাবি করেন, একটি আর্টিকেলটি তিনি নিজে লেখেননি এবং তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।