“তাহার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং সে কথা বলতে না পারায় তাহাকে অতি গভীর ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয় নাই।”
Published : 04 Sep 2024, 03:39 PM
অসুস্থ হয়ে পড়ায় পাঁচ দিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিনের মাথায় সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদন ও জেলহাজতে পাঠানোর আবেদনের শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মো. আক্তারুজ্জামান বুধবার তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
রিমান্ডে ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়ায় হাজী সেলিমকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বুধবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাববাগ থানার এসআই আক্কাস মিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “উক্ত আসামির নিকট থেকে মামলার ঘটনার বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়াছে। যাহা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখিয়া যাচাই বাছাই করিয়া দেখা হইতেছে। উক্ত আসামি কথা বলতে পারে না এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাহার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং সে কথা বলতে না পারায় তাহাকে অতি গভীর ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয় নাই।”
তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে আবার এও বলেছেন: “আসামির ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড হইলেও তাহার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং সে কথা বলতে না পারায় তাকে রিমান্ডে রাখিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব নয় বিধায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক তাহাকে আপাতত আর জিজ্ঞাসাবাদ না করিয়া জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন।”
আদালতে লালবাগ থানার জিআরও (জেনারেল রেজিস্ট্রার অফিসার) মো. সেলিম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল ৬টায় হাজী সেলিমকে বিধি অনুসারে সরকারি গাড়িতে করে আদালতের হাজত খানায় আনা হয়। তবে তাকে আদালতের এজলাসে নেওয়া হয়নি।”
হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে সংগোপনে সকাল ৬টায় আদালতে আনা হয়। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। রাতে দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই খবর পেয়ে আমরা তার অসুস্থতার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট জেনারেল রেজিস্ট্রার বিভাগে যোগাযোগ করলে তারা জানান, তাকে সকালেই হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
প্রাণ নাথ বলেন, “আমরা জামিনের আবেদন করতে পারিনি। আদালত জামিন না দিলে যেহেতু তিনি সাবেক এমপি তার প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পাওয়া এবং যেহেতু তিনি অসুস্থ তার সুচিকিৎসার জন্য আমরা আবেদন করতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু আমরা খবর পাইনি তাই এ ধরনের কোনো আবেদনই করতে পারিনি।”
হাজী সেলিমের আইনজীবী বলেন, “আজ আমরা সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিনের ও প্রথম শ্রেণির কয়েদির মর্যাদা চেয়ে তার চিকিৎসার আবেদন করব। যদি আদালত অনুমতি দেন তাহলে আগামীকাল আমরা এইসব আবেদনের শুনানি করতে পারব।”
লালবাগ আসনের সাবেক এমপি হাজী সেলিমকে গত রোববার রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে কলেজছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
নিহত খালিদের বাবা কামরুল হাসান গত ১৯ অগাস্ট লালবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৫১ জনকে তিনি আসামি করেছেন।
সোমবার হাজী সেলিমকে আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাইলে ঢাকার হাকিম আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
পুরনো খবর