গত শতকের সত্তরের দশক থেকে কবিতার পাশাপাশি আসাদ চৌধুরী লিখে গেছেন প্রবন্ধ, শিশুতোষ গল্প ও কবিতা, অনুবাদ, ইতিহাস ও জীবনীগ্রন্থ।
Published : 05 Oct 2023, 02:10 PM
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরী আর নেই।
কানাডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১টায় তার মৃত্যু হয়। কবির বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
গত শতকের সত্তরের দশক থেকে কবিতার পাশাপাশি আসাদ চৌধুরী লিখে গেছেন প্রবন্ধ, শিশুতোষ গল্প ও কবিতা, অনুবাদ, ইতিহাস ও জীবনীগ্রন্থ। এ পর্যন্ত প্রায় চার ডজন বই প্রকাশিত হয়েছে তার।
আসাদ চৌধুরী বেশ কয়েক বছর ধরেই কানাডায় ছেলে ও মেয়ের সাথে ছিলেন। গত বছর থেকে ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি।
কবির জামাতা নাদিম ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক দিন ধরেই উনি অসুস্থ ছিলেন। সবশেষ তিন সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।”
তার চৌধুরীর মরদেহ দেশে আনা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। নাদিম ইকবাল বলেন, " আমাদের ইচ্ছা কানাডাতেই দাফন করার। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরিবারের সবার সাথে বলে নেব।"
১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আসাদ চৌধুরী। আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা এবং বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে কলেজের শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর চাকরিজীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১৯৬৪-১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন তিনি।
আসাদ চৌধুরী পরে থিতু হন ঢাকায়, সে সময় বিভিন্ন সংবাদপত্রে তিনি সাংবদিকতাও করেন। দীর্ঘদিন বাংলা একাডেমিতে চাকরি করার পর তিনি পরিচালক হিসেবে অবসরে যান।
তবক দেওয়া পান, জলের মধ্যে লেখাজোখা, মেঘের জুলুম পাখির জুলুম, আমার কবিতা, ভালোবাসার কবিতা, প্রেমের কবিতা, নদীও বিবস্ত্র হয়, বাতাস যেমন পরিচিত, বৃন্তির সংবাদে আমি কেউ নই, কিছু ফল আমি নিভিয়ে দিয়েছি, ঘরে ফেরা সোজা নয় তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
এছাড়া প্রবন্ধ সঙ্কলন কোন অলকার ফুল, জীবনীগ্রন্থ সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু, রজনীকান্ত সেন, স্মৃতিসত্তায় যুগলবন্দী এবং ইতিহাস গ্রন্থ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক পান আসাদ চৌধুরী।