“আমি তো দেখেছি চিকিৎসকরা ফি নেন, রশিদ দেন না। এখন তারা রশিদ দিলে একটা ডকুমেন্ট থাকবে।”
Published : 17 Feb 2025, 03:36 PM
করের আওতা বাড়াতে চিকিৎসক ও আইনজীবীদের মত পেশাজীবীদের নেওয়া ফির বিপরীতে রশিদ দেওয়ার নিয়ম চালুর ওপর জোর দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, “আমি তো দেখেছি চিকিৎসকরা ফি নেন, রশিদ দেন না। এখন তারা রশিদ দিলে একটা ডকুমেন্ট থাকবে।”
সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি সেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন উপদেষ্টা।
জোর করে করহার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারাই (ডিসি) বিষয়টি তুলেছে। অনেকেরই কর দেওয়ার সামর্থ্য আছে, দিচ্ছে না। তাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করা।
“শুধু ঢাকা নয়, বাইরের শহরগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সুযোগ আছে। আমি বলেছি, সেখানে গুরুত্ব দিতে। তারা অলরেডি ড্রাইভ দিয়েছে গ্রাম থেকে ভ্যাট, ট্যাক্স আদায় করতে।”
রাজস্ব আদায় বাড়াতে অনলাইনে আর্থিক লেনদেন বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
ব্যবসায়ী, চিকিৎসক ও আইনজীবীদের লেনদেন অনলাইনে করার তাগাদা দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অনেক ব্যবসায়ী অনলাইনে টাকা-পয়সা লেনদেন করে না। নগদ লেনদেন করায় সব কিন্তু করের আওতায় আসছে না, এটা সম্ভবও না।”
ডাক্তার ও ব্যবসায়ীরা নগদ লেনদেন করায় তা করের আওতায় আসছে না মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, লেনেদেন কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হলে করের আওতায় আনা যাবে।
এবার অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “লেনদেন যেন ডিজিটাল মাধ্যমে বাড়ে, তা বলা হয়েছে। তাহলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।’’
কর্মসংস্থান বাড়ানো ওপর গুরুত্ব দিয়ে সালেহ উদ্দিন বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মর্সচি, এডিপি বাস্তবায়নে স্থানীয় কর্মসংস্থান যেন হয়, তাদের চাহিদা যেন মেটানো যায়, সেদিকে তিনি নজর দিতে বলেছেন।
এসএমই পণ্য উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের উদ্যোক্তাদের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে জানিয়ে চীনের উদাহরণ দেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “চীনের একটি গ্রামের পণ্য বিশ্বের নামি দামি স্টলগুলোতে পাওয়া যায়। তারা গ্রামে বসেই সিঙ্গাপুরের মত বাজারে পণ্য রপ্তানি করছে। কারণ তাদের যোগাযোগ মাধ্যমটি আছে, আমাদের নেই। আমরাও সেই অনলাইন মাধ্যমের সুযোগটি করতে চাই।”
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে চিকিৎসক আছেন এক লাখের মত, তাদের বেশিরভাগই শহরাঞ্চলে বসবাস করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপের তথ্যঅনুযায়ী, দেশে চিকিৎসক পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু মাসিক আয় সবচেয়ে বেশি।
কোনো পরিবারের প্রধান একজন পুরুষ ডাক্তার হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মাসিক মাথাপিছু গড় আয় হয় ৪৬ হাজার ৯৩৮ টাকা। পরিবারের প্রধান একজন নারী ডাক্তার হলে সদস্যদের গড় আয় হয় ৪৮ হাজার ৪৮৪ টাকা।
বর্তমানে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, আইনজীবীর মত পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ ও নবায়নের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দিতে হয়।