সব মিলিয়ে ওই যাত্রীর কাছ থেকে ৩ কেজি ২৮৯ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা
Published : 12 Feb 2025, 01:19 AM
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি ফেরত এক যাত্রীর হ্যান্ডব্যাগ এবং সঙ্গে থাকা ব্লেন্ডারের ভেতর থেকে প্রায় চার কোটি টাকার সোনা উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানো ওই যাত্রীকে আটক করা হয়েছে বলে অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দার রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মাসুদ করিম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা আগমনী টার্মিনালের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। ইমিগ্রেশন এলাকায় হাবিবুর রহমানকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করার পর তার ওপর নজর রাখা হয়।
পরে ওই যাত্রী বেল্ট থেকে ব্যাগেজ সংগ্রহ করে কোনো ঘোষণা ছাড়াই কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেল অতিক্রমের সময় শুল্ক গোয়েন্দারা তার কাছে সোনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
এরপর গোয়েন্দা দল যাত্রীর দেহ ও ব্যাগেজ তল্লাশি করে তার হ্যান্ডব্যাগে ২৯৯ গ্রাম এবং বুকিং করা ব্যাগেজে থাকা তিনটি ব্লেন্ডারে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছয়টি স্বর্ণপিণ্ড খুঁজে পান; যেগুলোর ওজন ২ কেজি ৯৯০ গ্রাম।
সব মিলিয়ে ওই যাত্রীর কাছ থেকে ৩ কেজি ২৮৯ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ভাষ্য।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জব্দ করা সোনা ঢাকা কাস্টমস হাউজে জমা দেওয়া হয়েছে। আর হাবিবুরকে শুল্ক আইনে চোরাচালানের অভিযোগে ফৌজদারি মামলায় বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
দুই প্রবাসীর মালামাল চুরি, ২ জনকে অর্থদণ্ড
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই প্রবাসীর অর্থ ও মালামাল লোপাটকারী চক্রের দুইজন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে ধরা পড়ার পর তাদের অর্থদণ্ড দিয়েছেন নির্বাহী হাকিম।
দণ্ড পাওয়া দুজন হলেন— ৫৫ বছর বয়সী শাহদুজ্জামান খোকন ও ৪৪ বছর বয়সী নিজাম উদ্দিন।
মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিব হাসান ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি কাতার থেকে একটি ফ্লাইটে (কিউআর-৬৪০) বাংলাদেশে আসেন কাতার প্রবাসী মানিক খান। আর ৭ ফেব্রুয়ারি ইউএস-বাংলার ফ্লাইটে (বিএস-৩৬২) জেদ্দা থেকে আসেন পাবনা জেলার সৌদি প্রবাসী আরিফ প্রমানিক।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে দুই নম্বর ক্যানোপি এলাকায় অবস্থানকালে প্রায় একই কায়দায় সুকৌশলে তাদের সাথে থাকা টাকাসহ ব্যাগগুলো হাতিয়ে নেয় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই জন।
এর মধ্যে মানিক খানের ব্যাগে ৩ হাজার ৭০০ রিয়ালসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আরিফ প্রামাণিকের ব্যাগে ৪ হাজার ৭৩৫ রিয়াল ছিল।
পরে দুইজনই এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অফিসে অভিযোগ করেন। প্রথম ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও পাওয়া না গেলেও ৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা পায় এপিবিএন।
ভিডিও দেখে দুইজনকে শনাক্ত করার পর মঙ্গলবার তাদের বিমানবন্দর এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করে বিমানবন্দরে এপিবিএনের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে শাহদুজ্জামান খোকন ও নিজাম উদ্দিন ‘অপরাধের কথা স্বীকার করেন’ বলে এপিবিএনের ভাষ্য।
পরে ভুক্তভোগীদের খবর দিয়ে আনা হয় এবং আটক দুইজনকে হাকিমের সামনে হাজির করা হয়। নির্বাহী হাকিম মেহেদী হাসান তাদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন।
আইনগত প্রক্রিয়া শেষে করে দুই প্রবাসীকে টাকা ও মালামাল বুঝিয়ে দেওয়া হয় বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিব হাসান ভূঁইয়া জানান।
আটক দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হল না কেন জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই প্রবাসীই স্বল্প সময়ের জন্য দেশে এসেছেন। এই মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত তারা থাকার সুযোগ পাবেন না। তাছাড়া, মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে। তাই আদালত তাদের অর্থদণ্ড দিয়ে অব্যাহতি দিয়েছে।"
বিমানবন্দর এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস) অনিতা রানী সূত্রধর বলেন, “অনেক প্রতারক ও পকেটমার যাত্রীবেশে ক্যানোপি এলাকায় অবস্থান করে। এ ধরনের প্রতারক ও পকেটমারসহ অন্যান্য যাত্রী হয়রানি দমনে এপিবিএন কাজ করছে।”