আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার এবং চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
Published : 26 May 2024, 04:16 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব থেকে দুর্যোগকবলিত এলাকার মানুষকে বাঁচাতে আট থকে নয় হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।
এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার এবং চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ঝড় মোকাবেলার পরে রেসকিউ করার জন্য টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে, আমাদের সেনাবাহিনীর টিম প্রস্তত রয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস মেকাবিলা করার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর লোকজন সমস্ত সরঞ্জামাদি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এক কথায় আমরা আরও সক্ষমতার সাথে প্রস্তুত রয়েছি।
“কালক্ষেপণ না করে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ৮-৯ হাজার নিরাপদ আশ্রয়স্থল প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি ঝড় মোকাবেলার পরে রেসকিউ করার জন্য টিম প্রস্তুত রয়েছে।”
রোববার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
কত সংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছেছে প্রশ্নে মহিববুর রহমান বলেন, "ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় অর্ধেক লোক পৌঁছেছে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৮ লাখের বেশি।"
তিনি বলেন, " ব্যাপক যেহেতু বৃষ্টিপাত হতে পারে, সে জন্য রাস্তাঘাটে গাছপালা পড়ে গেলে যেন দ্রুত সড়ানো যায় সে কারণে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাথে সাথে যে সব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে তা রোধে আমরা প্রস্তুত আছি।"
সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অন্য কোন সংস্থা কাজ করছে কি না জানতে চাইলে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, "শুধু ঝড় মোকাবেলা না, ঝড়ের পরে যেন সবাই টিম গঠন করে কাজ করতে পারে সেই বিবেচনা করে কাজ করবে। আমাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড আমাদের সিভিল প্রশাসন সভাই এটা ফেইস করার জন্য প্রস্তত রয়েছি।"
ছুটি বাতিল
প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, "যার জন্য আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের সমস্ত মন্ত্রণালয়ের সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের, সিটি করপোরেশন, পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এবং আমাদের যে সমস্ত লঞ্চ স্টিমার নৌযান চলাচল করছে এগুলো চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
“বঙ্গবন্ধু টানেল রোববার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক কথায় আমরা এই দুর্যোগ আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, "এই দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। শনিবার আমরা দুইটা মিটিং করেছি, তখন আমরা বলেছিলাম রোববার ভোর থেকে শুরু হতে পারে, যেহেতু গতকাল ঝড়ের গতিটা ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার কিন্তু ভোর রাতে গতি কমে ১০ কিলোমিটার এবং পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে আসে, যার জন্য এখনও এসে পৌছে নাই।
"তবে এটা যেহেতু মহাবিপদ সংকেতে পরিণত হয়েছে, আজকে সন্ধ্যা নাগাদ এই দুর্যোগের প্রথম ধাপ আমাদের বাংলাদেশ অতিক্রম করা শুরু হবে এবং মধ্যরাতে মূল ঝড় আমাদের বাংলাদেশ অতিক্রম করে যাবে।"
তিনি বলেন, "ঝড় সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে গতিবেগ হল ৯০ কিলোমিটার থেকে ১২০ কিলোমিটার আর যখন উপকূলে আঘাত হানবে তখন এটা ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার হবে। যার কারণে উপকূল এলাকা ১০-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হবে। তখন জোয়ার থাকলে এটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ জন্য আমরা সবাইকে নিয়ে সভা করেছি সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।"
প্রতিমন্ত্রী বলেন, "শুধু উপকূলেই নয়, যেহেতু ঝড়টা অস্বাভাবিকভাবে হবে, সেহেতু এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। যখন শুরু হবে তখন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার জন্য আমরা মনে করি সমস্ত বাংলাদেশ এই বৃষ্টিপাতের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার জন্য আমাদের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের শহর গ্রাম সিটি করপোরেশনে ব্যাপকভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য শহরে যান চলাচলে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।”