মানহানির পাল্টাপাল্টি মামলার মধ্যেই আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তারের পর হত্যা মামলায় বুধবার তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 04 Sep 2024, 06:57 PM
মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এর সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান দোলন ও সাধারণ সম্পাদক ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে আসামি করে মানহানি মামলা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে মামলার আবেদন করেন বাজুস এর উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল।
বাদীর জবাববন্দি গ্রহণ করে দুই আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মহানগর হাকিম মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে রোববার ঢাকার আদালতে মানহানির দুটি মামলা হয়।
১০০০ কোটি টাকার মানহানির মামলাটি করেন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আগরওয়ালা। একই আদালতে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলাটি করেন দোলন।
এবার দোলন ও আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করলেন রুহুল আমিন রাসেল।
রুহুল আমিনের অভিযোগ, ২৮ অগাস্ট বেলা ১১টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টার মধ্যে বাইতুল মোকারমের দ্বিতীয় তলায় সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক খান দোলন এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক এবং মানহানিকর বক্তব্য দেন।
সেখানে তারা অভিযোগ করেন, বাজুসের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর এবং উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল স্বর্ণের দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
বাজুসের নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে বর্ণনা করে তারা অভিযোগ করেন, আনভীর অবৈধভাবে বাজুসের সভাপতির পদ দখল করেছেন।
রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বাজুস সদস্যদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগও আনেন দোলন ও আগরওয়ালা।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মুনিয়া হত্যা ও ধর্ষণ, ভূমি দস্যুতা, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, ঋণখেলাপি এবং ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের সঙ্গে আনভীরের সম্পৃক্ততার বিষয় তুলে ধরে সাংবাদিকদের কাছে বিবৃতি দেন দোলন ও আগরওয়ালা।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সাংবাদিকতা পেশাকে আনভীরের ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ কুলষিত করছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রত্যক্ষ মদদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় অনেকেই হতাহত হয়েছেন বলে ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।
দোলন ও আগরওয়ালার এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রুহুল আমিন রাসেল অভিযোগ করেছেন, এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্যের কারণে তার এবং বাজুসের সুনাম ক্ষুণ্ণ ও ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে।
আসামিরা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে তার এবং বাজুসের সভাপতির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ আনেন রুহুল আমিন।
এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারণে মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বাদী দাবি করেছেন, এতে তার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা।
মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মো. রিপনুল হাসান ও হায়দার আলীসহ আরও কয়েকজনকে।
মানহানির পাল্টাপাল্টি মামলার মধ্যেই আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার গুলশানে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড কার্যালয় ঘিরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বাড্ডা থানা এলাকায় হৃদয় আহমেদ নামে তরুণকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অনেকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য আগরওয়ালাকেও আসামি করা হয়েছে।