বাঙালির শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে বুদ্ধিভিত্তিক মনস্তত্ব গঠনে ভূমিকা রেখে প্রাণ হারানো জাতির অগুনতি সূর্যসন্তানের স্মরণের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন হবে শনিবার।
Published : 12 Dec 2024, 02:16 PM
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দিনটি উপলক্ষে শনিবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির সূর্যসন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।
এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-বিটিভিসহ সহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনও সরাসরি প্রচার করবে।
বাঙালির শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লড়াইয়ে বুদ্ধিভিত্তিক মনস্তত্ব গঠনে ভূমিকা রেখে প্রাণ হারানো জাতির অগুনতি সূর্যসন্তানের স্মরণের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন হবে শনিবার।
এছাড়া সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিরপুর স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সবস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ খুলে দেওয়া হবে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা বাণী দেবেন।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা হবে।
বিজ্ঞপতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বেতার, বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে।
দিবস উপলক্ষে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন রাখা হয়েছে।
দিবসের তাৎপর্য রক্ষায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার না করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। তবে বিজয়ের প্রাক্কালে এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়। আর একাজে তাদের সহযোগিতা করেছিল দেশীয় দোসররা।
ডিসেম্বরের মধ্যভাগে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় যখন অনিবার্য; তখন এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে বাংলাদেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীদের; এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেওয়া।
দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির বিজয় যখন আসন্ন, তখনই ঘটে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম সেই হত্যাকাণ্ড।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।
নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।
শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
প্রায় অর্ধ শতক পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জনের একটি তালিকা করে।