খাল পরিষ্কার করতে গিয়ে মশার কবলে মন্ত্রী ও মেয়র

মন্ত্রী যখন বক্তব্য শুরু করলেন, মেয়র আতিককে তখন গায়ে, মাথায় বসা মশা তাড়াতে দেখা যায়। অন্য কর্মকর্তারাও একটু পর পর হাত-পা নাড়াচ্ছিলেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2024, 10:09 AM
Updated : 20 March 2024, 10:09 AM

পুরোদস্তুর গরম শুরুর আগেই রাজধানীতে মশার উপদ্রব এবার কতটা বেড়েছে, তা টের পেলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

উত্তরায় একটি লেক পরিষ্কার করতে গিয়ে বুধবার তারা মশার উপদ্রবে বিড়ম্বনায় পড়েন। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসময় স্প্রে আর ফগার মেশিন ব্যবহার করে মশা তাড়ানোর চেষ্টা করেন।

উত্তরার ১২ ও ১৪ নম্বর সেক্টরের মাঝে রাজউকের খাল পরিষ্কার করতে গিয়েছিলেন মেয়র আতিক। আর সেই কর্মযজ্ঞ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার, নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহম্মদ খান, আকতার মাহমুদও উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রীর আগমন ঘিরে ১২ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজের গোড়ায় লেকের পাড়ে অস্থায়ী মঞ্চ বানানো হয়। পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম ঘুরে দেখে ওই মঞ্চে উপস্থিত হন মন্ত্রী, মেয়রসহ অন্যরা।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর বক্তব্য শুরুর আগে আগে একজন মশা মারার ওষুধ নিয়ে এসে স্প্রে করেন। এরপর তিনি যখন বক্তব্য শুরু করলেন, মেয়র আতিককে তখন গায়ে, মাথায় বসা মশা তাড়াতে দেখা যায়। অন্য কর্মকর্তারাও একটু পর পর হাত-পা নাড়াচ্ছিলেন।

পরে বক্তব্য দিতে এসে মেয়র শুরুতেই বলেন, “মাননীয় মন্ত্রী আপনি দেখতেই পাচ্ছেন কী অবস্থা। আপনি স্বচক্ষে দেখেছেন, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি আসায় আমাদের মনোবল বেড়ে গেছে।”

তাজুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ধারণা করছে, এবার মশার উপদ্রব গত বছরের চেয়ে বেশি হবে। কয়েকদিন আগে ডিসিদের সম্মেলনে একটা অনুষ্ঠানে আমি প্রধান অতিথি ছিলাম। আমি ভুলে যাই নাই, গত বছর এইডিস মশা আমাদের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে।

“এবারো আমরা ধারণা করছি এর মাত্রা আরো বাড়তে পারে। এজন্য ডিসিদেরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।”

মন্ত্রী বলেন, “আমরা জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছি মশা নিধন করার জন্য এবং জনগণকে সচেতন করার জন্য। মশা মারার ওষুধ, যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কিনা, সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি কেমন এগুলো পর্যালোচনা করা; এছাড়া মানুষকে সচেতন করার জন্য কীভাবে আরো বেশি কাজ করা যায়, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

মন্ত্রীর বক্তব্যের পর কয়েকটি ফগার মেশিন নিয়ে আসেন ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নকর্মীরা। তারা ওই এলাকায় মশা তাড়াতে ধোঁয়া দিতে থাকেন।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সময় উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা আবদুল হাই বলেন, “আপনারা দেখেন দিনের বেলায় এখানে কী পরিমাণ মশা। আর রাতে কী অবস্থা, একবার চিন্তা করেন।

“মশার কয়েল জ্বালাই, মশারি টানাই, ব্যাট দিয়ে মারি, তাও মশা কমাতে পারি না।”

রাজউক উত্তরার ওই লেকটি সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিচ্ছে না মন্তব্য করে মেয়র আতিক বলেন, “এটা মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। এই লেকটি রাজউকের। এটি আগে ওয়াসার খাল ছিল। এই খালটির মালিকানা ডিএনসিসি বুঝে পায়নি। ফলে এখানে কোনো কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।

“রাজউক বলে খাল ওয়াসার, ওয়াসা বলে রাজউকের। এই ধরনের খেলা চলতে থাকায় জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। এখানে আমরা কোনো কার্যক্রম চালাতে পারছি না। তারপরও চারবার পরিষ্কার করেছি, কিন্তু কয়েকদিন পর কচুরিপানায় ভরে যায়। লেকটি আমাদের দিলে আমরা নিয়মিত কার্যক্রম চালাব। এটাকে হাতিরঝিলের আদলে গড়ে তোলা হবে।”