স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
Published : 27 Jul 2024, 05:20 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলার ঘটনায় ঢাকা মহানগর বিভিন্ন থানায় দুইশরও বেশি মামলা হয়েছে।
শনিবার বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ এক বার্তায় জানিয়েছে, ২০৭টি মামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে কোন কোন থানায় মামলা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই বার্তায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
এরই মধ্যে বিএনপি জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেককেই রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জুনের শেষে হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা ফের মাঠে নামে। জুলাইয়ে তা সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছড়িয়ে যায়।
ছাত্ররা প্রথমে পরিপত্র পুনর্বহাল অর্থাৎ কোটা বাতিলের দাবি সামনে আনলেও পরে কোটা সংশোধন করে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ করার দাবি জানাতে থাকে।
এই দাবিতে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বাংলা ব্লকেড নামে অবরোধ কর্মসূচি আসতে থাকে।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীসহ দুই জন, চট্টগ্রামে ছাত্রদল নেতাসহ তিন জন ও রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রের মৃত্যু হয় সহিংসতায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা হয়, সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
রাজধানীর বাড্ডা, উত্তরা ও ধানমন্ডি এলাকায় গুলিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর আসে। গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলা শুরু হয়।
রামপুরায় বিটিভি ভবন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাব স্টেশন, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনেও ভাঙচুর হয়।
সেদিন থেকেই ঢাকার উত্তরার পথে পথে, ধানমন্ডির শংকর ও সোবহানবাগ এলাকা, মোহাম্মদপুর ও বসিলা, মিরপুর এলাকায় গোলাগুলির খবর আসে।
ঢাকার বাইরে নরসিংদী কারাগারে হামলা করে ফটক ভেঙে ৮৫টি অস্ত্র লুট করা হয়। সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গিসহ পালিয়ে যান আট শতাধিক বন্দি। এসব অস্ত্রের মধ্যে ২০টি পরে উদ্ধার হয়, গুলি উদ্ধার হয়েছে এক হাজারের কিছু বেশি।
রামপুরা, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী, কদমতলী এলাকা পাঁচদিন ধরে ছিল অচলপ্রায়। পুলিশ, বিজিবির সঙ্গে সংঘাতে ব্যাপকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের তথ্য আসে।
১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি হয়। নামানো হয় সেনাবাহিনী। এর মাঝেও ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, মোহাম্মদপুরে সংঘাত চলতে থাকে। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে গণমাধ্যমে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোরও রয়েছে।
কারফিউ জারির তিনদিন পর নিয়ন্ত্রণে আসে যাত্রাবাড়ী ও রামপুরা-বাড্ডা এলাকা।
তবে অফিস সীমিত পরিসরে খুললেও কারফিউ এখনও চলছে।