ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির সঙ্গে দেনা-পাওনা নিয়ে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের বিরোধ নিষ্পত্তিতে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় প্রথম আরবিট্রেশন মিটিং পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে
Published : 30 May 2024, 02:39 PM
ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির হাতে থাকা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের ওপর স্থিতাবস্থা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির সঙ্গে দেনা-পাওনা নিয়ে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের বিরোধ নিষ্পত্তিতে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় প্রথম আরবিট্রেশন মিটিং পর্যন্ত এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে; এরপর শেয়ার হস্তান্তরে কোনো বাধা থাকবে না বলে আইনজীবী জানান।
এর আগে গত ১৬ মে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের ওপর দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করে আপিল বিভাগ।
ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ ও ইমতিয়াজ ফারুক। সিনোহাইড্রো করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।
পরে মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, “কোর্টকে আমরা বলেছি যে কাজ তো বন্ধ হয়ে আছে। তখন কোর্ট বলল, যেদিন আর্বিট্রেশন প্রসেসের প্রথম সিটিং হবে সেদিন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা থাকবে। অর্থাৎ আর্বিট্রেশনের প্রথম মিটিংয়ের পর আর স্থিতাবস্থা থাকবে না, স্থিতাবস্থা না থাকলে শেয়ার হস্তান্তরে আর বাধা থাকবে না।”
২০১৩ সালে ইতালিয়ান ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কার্যাদেশ দেয়। কিন্তু তারা কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হলে দুই চীনা কোম্পানির সঙ্গে মিলে একটি কোম্পানি করে।
ওই তিন কোম্পানি মিলে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়। সেখানে শর্ত ছিল, অংশীদারদের কেউ জানুয়ারি বা জুনে ঋণের সুদ দিতে ব্যর্থ হলে সুদের ওই অংশটা বাকি দুই গ্যারান্টারকে দিতে হবে এবং সুদ দিতে ব্যর্থ কোম্পানির শেয়ার বাকিদের কাছে চলে যাবে। বাংলাদেশ সরকারও তাতে অনুমোদন দেয়।
২০২৩ সালে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। সে কারণে ঋণদাতা চীনা ব্যাংক ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারি ইতালিয়ান কোম্পানিকে চিঠি দিলে তারা আরবিট্রেশানে যায়।
ওই আরবিট্রেশনের প্রেক্ষিতে ইতালিয়ান-থাই হাই কোর্ট ডিভিশনে মামলা করে যাতে শেয়ার হস্তান্তর স্থগিত হয়। হাই কোর্ট মামলাটি ‘চলার যোগ্য না’ বলে রুল খারিজ করে দেয়। তখন তারা আপিল বিভাগে আসে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। পুরো কাজ শেষ হলে মোট ৩১টি র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন ওঠানামার সুযোগ হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ২ সেপ্টেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ উদ্বোধন করেন। পরদিন বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়া হয়। পরে কারওয়ান বাজার (এফডিসি) অংশে নামার সংযোগ সড়ক বা ডাউন র্যাম্প খুলে দেওয়া হয় এ বছরের ১৯ মার্চ।
এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বাকি ব্যয়ের মধ্যে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ, চীন শ্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল গ্রুপ ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন ১৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল।
পুরনো খবর
শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বন্ধ