রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন ও হাই কোর্ট প্রার্থিতা বাতিল করলেও চেম্বার বিচারপতি তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি যে সরকারি চাকরি করেন, এই আবেদনে তা গোপন করা হয়।
Published : 31 Dec 2023, 03:17 PM
হলফনামায় সরকারি চাকরির তথ্য গোপন করে নির্বাচনে দাঁড়ানো মোহাম্মদ সালা উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে আপিল বিভাগ।
তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন সালা উদ্দিন। নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করে দিলেও উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করে তা ফিরিয়ে আনার পর তাকে রকেট প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
পরে প্রকাশ পায় তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন। সেই তথ্য গোপন করে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে তুলে ধরেছিলেন সালা উদ্দিন।
রোববার তার বিষয়ে শুনানির পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, “তার প্রার্থিতা বাতিল করে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
“এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।”
আরো পড়ুন:
সরকারি চাকরিতে থেকেও স্বাচিপের হয়ে ভোটের প্রচারে
সালা উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য জমা দেন। ওই তথ্যে অসঙ্গতি থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এর বিরুদ্ধে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে তাও নাকচ হয়।
এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাই কোর্টে রিট করেন সালা উদ্দিন, সেটিও খারিজ হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে যান।
চেম্বার বিচারপতির আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে প্রচারেও নামেন সালা উদ্দিন। এরপর তার সরকারি চাকরি করার তথ্য আবার সামনে আসে।
আইনজীবী শামীম আজিজ বলেন, “গত ২১ ডিসেম্বর ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়। ওই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ২৭ ডিসেম্বর ইসি চেম্বার আদালতে আবেদন করলে আবেদনটি শুনানির জন্য আসে।”
সালা উদ্দিন স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে ২০১২ সাল থেকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করছেন। কিন্তু মনোনয়নপত্রে ব্যক্তিগত তথ্যে তিনি পেশা হিসেবে ‘ব্যবসা (ওষুধ)’ উল্লেখ করেছেন। তিনি যে সরকারি চাকরিজীবী, সেই তথ্য গোপন করেছেন।
সংবিধান ও সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকুরেদের রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ।