হেনস্তাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তখন সংসদে দাবি তোলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। সরব হন আরও অনেক তারকা।
Published : 17 Apr 2025, 11:30 PM
তিন বছর আগে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় এক নারীর টিপ পড়া নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ডের ঘটনায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক লতা সমাদ্দারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ওই ঘটনায় চাকরি হারানো পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
আসামির তালিকায় লতা সমাদ্দারের স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মলয় মালা এবং অভিনয় জগতের ১৬ তারকার নামও আছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী তৌহিদ খান বলেন, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে মামলার আবেদন করেন নাজমুল তারেক। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানাকে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে।
অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য সুবর্ণা মোস্তফা, অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন, সাজু খাদেম, প্রাণ রায়, সায়মন সাদিক, মনোজ প্রামাণিক, স্বাধীন খসরু, চয়নিকা চৌধুরী, আশনা হাবিব ভাবনা, জ্যোতিকা জ্যোতি, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, দেবী সান, নাজনীন নাহার চুমকি, সুষমা সরকার ও কুসুম সিকদার।
শোবিজের ‘আরও কয়েকজনকে’ আসামি করা হয়েছে ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে।
২০২২ সালের এপ্রিলে কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় হেনস্তার অভিযোগ তোলেন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার।
ওই বছরের ২ এপ্রিল থানায় দেওয়া অভিযোগে লতা সমাদ্দার বলেন, সেদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে তিনি ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমার সামনে রিকশা থেকে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে তিনি তেজগাঁও কলেজে যাচ্ছিলেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, সেদিন ‘সেজান পয়েন্টের’ সামনে থেমে থাকা একটি মোটরসাইকেলে পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক বসে ছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি তার কপালে টিপ পরা নিয়ে ‘বাজে’ মন্তব্য করেন। প্রতিবাদ করায় গালিগালাজ করা হয় লতাকে। তাকে উদ্দেশ্য করে 'টিপ পরছোস কেন' মন্তব্য করেন ওই পুলিশ সদস্য।
লতা সেদিন অভিযোগ করেন, প্রতিবাদ করায় পুলিশের ওই সদস্য মোটরসাইকেল চালিয়ে তার গায়ের ওপর উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেন।
তার এই অভিযোগ প্রকাশ পেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। হেনস্তাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংসদে দাবি তোলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা।
ওই সময় শোবিজের আরও অনেক তারকা প্রতিবাদে শামিল হন। জড়িত পুলিশ সদস্যের বিচার দাবিতে মানববন্ধনও হয়। এসব ঘটনার জেরে ওই সময় চাকরি হারান নাজমুল তারেক।
নাজমুল তারেক তার মামলায় অভিযোগ করেছেন, ২০২২ সালের ওই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের সময় এসব তারকা ইচ্ছা করে পুলিশের মানহানি ঘটিয়েছেন। তারা সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও বক্তব্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন, যার ফলে তার পেশাগত ও সামাজিক জীবনের ‘মারাত্মক ক্ষতি’ হয়েছে।