“মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোটায় সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে কতজনের চাকরি হয়েছে, তারও তালিকা হবে,” বলেন ফারুক ই আজম।
Published : 15 Sep 2024, 06:22 PM
পর্যালোচনা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ‘ভুয়া’ কাউকে পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম৷
রোববার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। উপদেষ্টা ফারুক ই আজম এই মন্ত্রণালয়েরও উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সুবিধা নিয়ে থাকেন, তাহলে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ এমন অপরাধের তথ্য-প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
উপদেষ্টা বলেন, “মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোটায় সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে কতজনের চাকরি হয়েছে, তারও তালিকা হবে। তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কি না, তা নিরুপণ করা হবে।
“সেইসঙ্গে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কি না, তাও রিভিউ হবে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা যাতে সম্মানিত হন, সেটিও দেখা হবে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।“
ফারুক-ই-আজম বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হত, মন্ত্রণালয় সেখানে তদারকি করত না।
“মুক্তিযুদ্ধের মত গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা আর নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সেই গৌরব ফিরে পেতে চান। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকা রিভিউ করা হবে। যারা ভুয়া, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দেশে প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কত, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েই গেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অপূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছিল সরকার, যেখানে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জনের নাম ছিল।
বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে বিভিন্ন সময় অনিয়মের অভিযোগ শোনা গেছে। এমনকি বাংলাদেশে ‘ভুয়া’ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ঠিক কত, সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার তথ্য নেই মন্ত্রণালয়ের কাছে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বা জামুকা বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রায় আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সুপারিশ করেছে। সেই অনুযায়ী এগুলো বাতিল করা হয়েছে।
২০১৪ সালে পাঁচজন সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে সরকার, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। তখন সনদ বাতিলের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন।
সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক গত এপ্রিলে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, চিহ্নিত ভুয়া মুক্তিযুদ্ধাদের মধ্যে যারা ভাতা পেতেন, সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে মামলা করলে হাজার হাজার লোকের বিরুদ্ধে করতে হবে, বিধায় আর সেদিকে যাওয়া হয়নি।