দুর্নীতি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ''আমরা দুর্নীতির এক বিশাল সমুদ্রে ছিলাম।''
Published : 15 Sep 2024, 06:17 PM
দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা এবং `চুরি হওয়া’ সম্পদ পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর তার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
ছাত্র জনতার তুমুল গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের পতনের তিন দিনের মাথায় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোটের আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থা এমনকি সাংবিধানিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে ইউনূস বলেন, তার প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে আর্থিক খাতে সংস্কার শুরু করেছে এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং আমাদের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত।”
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিপ্লবের কথা তুলে ধরে বলেন, ''যা বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন আশার যুগের সূচনা করেছে “
অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের তুলে ধরে ইউনূস বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে, যা ভোটে কারচুপি প্রতিরোধ, বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রশাসন, দেশের দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা সংস্কার এবং সংবিধান সংশোধনের কাজ করছে।”
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী ‘স্বৈর শাসনের’ সঙ্গে যুক্ত ‘দুর্নীতিবাজদের’ চুরি করা সম্পদ তার সরকার ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দুর্নীতি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ''আমরা দুর্নীতির এক বিশাল সমুদ্রে ছিলাম।''
যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ইউনুসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং তার সংস্কার পরিকল্পনায় ওয়াশিংটন ডিসি সমর্থন করতে পেরে আনন্দিত বলেও জানান।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে আগ্রহী।
ঘণ্টাব্যাপী চলা আলোচনায় , আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম বিষয়ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের জন্য আসন্ন নিউইয়র্ক সফর নিয়েও আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার (ইউএসএআইডি) উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কাউর, ট্রেজারি বিভাগের পরিচালক জেরোড ম্যাসন।
আলোচনায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব এবং এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।