“যে মানুষগুলো কষ্টে আছে, তাদের কথা তুলে ধরলে এবং তাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ে এলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে”, বলেন তিনি।
Published : 08 Dec 2024, 06:49 PM
ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অপার সুযোগ করে দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “এই সুযোগের সদ্ব্যবহার আমাদের করতে হবে।”
রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘সুশাসনের জন্য জনসম্পৃক্ত সংস্কার: অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষা’ শীর্ষক নাগরিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ইউএনডিপি এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন-এর সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিটিজেন্স প্ল্যাটফরম ফর এসডিজিস, বাংলাদেশ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা তাদের জীবনবাজি রেখে ‘নতুন স্বাধীনতা’ এনে দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন,
ন্যায়বিচার যেন বিলম্বিত না হয়।
“যদি নাগরিক অধিকার রক্ষিত না হয়, তাহলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষিত হবে না। আর তা না হলে স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা পূরণেও আমরা ব্যর্থ হব।”
আয়োজকদের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের এগিয়ে নেওয়া না হলে ৫ অগাস্টের জীবন বিসর্জন কোনো কাজে আসবে না।
“যে মানুষগুলো কষ্টে আছে, তাদের কথা তুলে ধরলে এবং তাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ে এলেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে।”
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, “জুলাই বিপ্লব নিপীড়নকে উৎখাত এবং ন্যায়বিচার, সাম্য ও মানবতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। আমাদের ইতিহাসের এই সংজ্ঞায়িত মুহূর্তগুলো মনে করিয়ে দেয় যে ন্যায়বিচারের সন্ধান একটি ক্ষণস্থায়ী প্রচেষ্টা নয়, বরং একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি যা আমাদের বিচারিক মিশনের ভিত্তি তৈরি করে।”
দেশের ‘ক্রান্তিলগ্নের ভগ্নদশা থেকে’ বিচার বিভাগও মুক্ত নয় মন্তব্য করে রেফাত আহমেদ বলেন, “৫ অগাস্টের পর আপনারা সারাদেশের হদয়ে ভগ্নদশা দেখেছেন, সেই অবস্থা আমাদের বিচার বিভাগেও আছে।
“আমরা যথাযথ সংস্কারের চেষ্টা করছি। এমনকি আপনাদের আশস্ত করে বলতে চাই, বিচার বিভাগের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে।”
‘আমরা এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি’, মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিগত বছরগুলোতে সততার বদলে অসততা, অধিকারের বদলে বঞ্চনা, বিচারের বদলে নিপীড়ন, আশ্রয়ের বদলে নির্যাতনকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো এবং শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংলাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সংলাপের দুয়ার খোলা রাখা, সুশাসনের জন্য সংস্কার অব্যাহত রাখা এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দেওয়ার উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।