ঈদযাত্রা সহজ করতে খুলল বিআরটি প্রকল্পের ৭ ফ্লাইওভার

“ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য এই সাতটি ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার,” বলেন ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 06:49 AM
Updated : 24 March 2024, 06:49 AM

ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) সাতটি ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার সচিবালয় থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে ফ্লাইওভারগুলো উন্মুক্ত করে দেন।

তিনি বলেন, “ঈদ সামনে রেখে বিআরটি গাজীপুর-এয়ারপোর্ট রোডের সাতটি ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য এই সাতটি ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার। এই সাতটি ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে ঈদযাত্রা সহজ ও স্বস্তিদায়ক হবে।”

এ প্রকল্পের আটটি ফ্লাইওভারের মধ্যে যে সাতটি খুলে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাঁ-পাশ), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান-পাশ), ১৮০ মিটার জসীমউদ্‌দীন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮ মিটার ফ্লাইওভার।

রোববার থেকেই এসব ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

বিআরপি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “এ প্রকল্প নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে, যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। এটি বাস্তবায়নে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে।

“আশা করছি এ বছরই এটি দিয়ে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব। আমাদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আশা করছি, ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হবে। বিআরটি করিডোর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে।”

২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বিআরটি প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে।

এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

বিআরটি প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। তাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।

চীনের তিনটি এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানি এই প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে উড়াল সড়ক ও নিচের সড়ক নির্মাণের কাজ পেয়েছে চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি), জিয়াংশু প্রভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো–পারেটিভ। আর গাজীপুরে বিআরটির ডিপো নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে দেশীয় কোম্পানি সেল-ইউডিসি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক করতে একটি বৈঠক করেছি। সেখানে পরিবহন সেক্টর থেকে শুরু করে পুলিশের কর্মকর্তা সড়ক মহাসড়ক বিভাগসহ সকল অংশিজন উপস্থিত ছিলেন। সবাই বলেছেন, যার যার জায়গা থেকে তারা কাজ করবেন।

“ঈদের আগে পরে আমরা ট্রাক কভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রেখেছি, ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য। গতবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে, এবারও আমরা আশা করছি ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।”