বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
Published : 23 Oct 2023, 09:10 AM
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলায় ৯ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এরা সবাই আওয়ামী লীগ বা সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক এশারত আলী এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা এই সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। আগামী ৪ অক্টোবর মামলাটির পরবর্তী তারিখ দেওয়া হয়েছে।
আসামিরা হলেন: ইশতিয়াক মাহমুদ, নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খাঁন কাজল, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি।
আসামিদের মধ্যে ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। অন্য আসামিরা জামিনে রয়েছেন।
এদের মধ্যে নাইমুল হাসান ওরফে রাসেল ছিলেন মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি।
হামলায় মুজাহিদ আজমির তানহা নামে আরেকজনের নাম পাওয়া গেলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
গত বছরের ২৮ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৪ ডিসেম্বর ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পরে দেখা যায় সাক্ষীদের মধ্যে মামলার বাদী বদিউল আলম মজুমদার, খুশি বেগম ও মাহবুবুল আলম মজুমদার তাদের জবানবন্দিতে জনৈক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম বলেছেন।
পরে গত ২৭ ডিসেম্বর আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম বরাবর পাঠিয়ে দেন।
১ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরীর মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।
বার্নিকাটের বহরে হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ অগাস্ট রাতে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক- সাজন সম্পাদক মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো.
আব্দুর রউফ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়।
২০২২ সালের ১ মার্চ নয় জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় আদালত
অভিযোগ গঠন করে।
এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ অগাস্ট রাতে বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাড়িতে বার্নিকাটের বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। নৈশভোজের নামে তিনি গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র’ করছিলেন বলে খবর পায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
রাত আনুমানিক ১১টায় ছাত্রলীগ নেতা নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পাশাপাশি বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়।
তারা বদিউল আলম, তার স্ত্রী ও ছেলে মাহবুব মজুমদারকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
হামলাকারীরা সেদিন মাহবুবকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন এবং এরপর বাড়ির প্রধান গেট ধাক্কাধাক্কি করে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা চলে যায় বলেও মামলায় উল্লেখ করেন বদিউল।
তারা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে রাষ্ট্রদূত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
(প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)