“এই জায়গাটায় ১৪৪ ধারা জারি থাকে, তাই আমরা যেতে দেই নাই; এটাই আমাদের অপরাধ”, বলেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।
Published : 11 Mar 2025, 05:54 PM
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবিতে ‘গণআন্দোলন’ গড়ার ঘোষণা দিয়ে ফিরে গেছেন ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে সড়কে নামা বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার বিকালে সড়ক ছাড়ার আগে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান নেন তারা।
এদিন নয় দাবিতে স্মারকলিপি দিতে পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাওয়ার সময় ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারসহ ৯ দাবিতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছান।
সেখান থেকে যমুনার দিকে যেতে ডানে মোড় নিতেই ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কা দিলে পুলিশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। আর ব্যারিকেডের পাশে ছিল পুলিশ আর জলকামান।
আন্দোলনকারীদের স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা তাতে রাজিও হন।
তবে কিছুক্ষণ পর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে 'গণআন্দোলন' গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে ফিরে যান তারা।
আদৃতা রায় নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, “আজ আমাদের আন্দোলনকারী এক বোন আহত হয়ে হাসপাতালে। আমরা আগেই এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা জানাইছি আসব। সে অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আসতেছিলাম, সেই মিছিলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আদেশ পালন করা পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
“আমাদের অন্যতম দাবি, নিরাপত্তা দিতে না পারা জাহাঙ্গীরকে পদত্যাগ করতে হবে। সে তো পদত্যাগ করলই না, বরং নারীদের নেতৃত্বে একটা মিছিলে পুলিশ দিয়ে হামলা চালাইল। আমাদের পোশাক ছেড়া হইছে, লাথি মারা হইছে।”
তিনি বলেন, “এই জায়গায় দাঁড়িয়ে যার বাহিনী, যার আন্ডারে চলা বাহিনী, যার ঘোষণায় চলা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়, তাদের সঙ্গে কোনো আপস করতে পারি না।
“আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর এতদিন ক্ষমা চাননি, এখন আর ক্ষমা চাওয়ার মুখও নাই।”
তিনি বলেন, “এখন একমাত্র উপায় গণআন্দোলন গড়ে তোলা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগের আর কোনো পথ বাকি রাখে নাই।”
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “ওনাদের কর্মসূচি ছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা। হঠাৎ দেখি বাসভবনের দিকে ঢুকে যান। আমাদের প্রস্ততি ছিল, তখন আমরা তাদের বাধা দেই; বলি ‘সেখানে যাওয়া যাবে না; আপনাদের বক্তব্য বা স্মারকলিপি থাকলে আমি প্রতিনিধি পাঠিয়ে দেব।
“প্রতিনিধি পাঠাব বলার পর একপক্ষ রাজি হইছে, আরেকপক্ষ ব্যারিকেড ভাঙবেই। এখানে তারা ব্যারিকেড ভাঙছিল, আমাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। লাঠিচার্জ করার সুযোগ ছিল না, করিও নাই। বরং তারা রমনার এসিকে আঘাত করেছে।
“আমরা অত্যন্ত ধৈর্য নিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করি। আমাদের ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়েছেন। এটা তো স্যাটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট ছিল যে তারা প্রতিনিধি পাঠাবে।”
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, “এই জায়গাটায় যেহেতু ১৪৪ ধারা জারি থাকে, আমরা যেতে দেই নাই; এটাই আমাদের অপরাধ।
“তারা স্মারকলিপি দিতে প্রতিনিধি পাঠানোর কথায় রাজি হইল, এখন এসে বলতেছে যাবে না। এটা নাকি তাদের ব্যাপার।”