দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একীভূতকরণ এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সমিতিগুলো।
Published : 24 Oct 2024, 02:18 PM
সারা দেশে বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিবিএস) ভূমিকা পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ এর অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, “সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামাঞ্চলসহ সমগ্র দেশে প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।”
এ প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভূমিকা এবং কাঠামো পুণর্মূল্যায়ণের ‘প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে’ এই জাতীয় কমিটি গঠনের কথা বলছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
বিআরইবি এবং পিবিএস-এর ভিত্তি দলিলগুলো পর্যালোচনা, বিআরইবি এবং পিবিএস এর সাংগঠনিক কাঠামো পর্যালোচনা, বিআরইবি এবং পিবিএস এর সকল স্তরের কর্মীদের প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সমিতির প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং বিআরইবি এবং পিবিএস-এর প্রাসঙ্গিক নথি এবং ফাইল পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটির অনুরোধে বিআরইবি এবং পিবিএস তাদের সকল নথি সরবরাহ করবে।
“পর্যালোচনা ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কমিটি একটি প্রতিযোগিতামূলক, প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ, আর্থিকভাবে টেকসই এবং দক্ষ পরিষেবা প্রদানে সক্ষম গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন সেক্টরের জন্য উপযুক্ত কাঠামো সুপারিশ করবে। কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো সদস্যকে কো-অপ্ট করতে পারবে।”
দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একীভূতকরণ এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল সমিতিগুলো।
এর মধ্যে সমিতির ২০ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রতিবাদে গত ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন জেলার ৬১টি সমিতি সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলন শুরু করে।
বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জেলায় ভোগান্তি পোহাতে হয় পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন প্রায় দুই কোটি গ্রাহককে। পরে সমিতিগুলোর অফিসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা অনেক সমিতির অফিসের সামনে অবস্থান নেন।
ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বেশ কয়েক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়েছে পুলিশ। আন্দোলনে সক্রিয় অনেককেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর ধারাবাহিকতায় এখন পল্লী বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কারে হাত দিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।