দুই পক্ষের বিরোধ না মেটায় এবারও আয়োজন হচ্ছে আলাদাভাবে।
Published : 13 Oct 2022, 06:36 PM
তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় বার্ষিক সম্মিলন বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি, শেষ হবে ১৫ জানুয়ারি। আর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২০ জানুয়ারি, যা ২২ জানুয়ারি শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।
সভায় বিশ্ব ইজতেমার স্থান টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর ও আশপাশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কোভিড মহামারী জন্য গত দুবছর ঐতিহাসিক বিশ্ব ইজতেমা হয়নি। এবার কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আগামী ২০২৩ সালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আকারে টঙ্গীর মাঠে বিশ্ব ইজতেমা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সেজন্য আজকে সভাটি করেছি।”
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন ইজতেমা করতে গিয়ে মতবিরোধ চলছিল এবং এখনও আছে। মতবিরোধ নিরসনে এর আগে আমরা দুই ভাগে ইজতেমা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম, সেভাবে তারা সুম্পন্ন করেছে। এবারও ঠিক সেভাবেই...
“এক দলের নেতা হলেন জনাব জুবাযের (মাওলানা জুবায়ের আহমদ), অন্যদলের নেতা হচ্ছেন ওয়াসেক সাহেব (মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলাম)। তারা দুজনেই আগে একসঙ্গে তাবলিগ করতেন, এখন ওনারা দুজন দুপ্রান্তে চলে গেছেন।”
তাদেরকে ‘দাওয়াত’ দিয়ে আনা হয়েছিল জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “ইজতেমাটা যাতে সুসম্পন্ন ও সুন্দরভাবে হয়, সেই অনুরোধ করেছিলাম। পাশাপাশি আরও অনুরোধ রেখেছিলাম- আপনারা দুজন এক হয়ে আপনারা সিদ্ধান্ত দেন- কে আগে করবেন, কে পরে করবেন? কিংবা একসঙ্গে করতে পারবেন কি না?
“তারা একমত হতে পারেননি। কে আগে করবেন, কে পরে করবেন- সেই বিষয়েও একমত হতে পারেননি। আমাদের ওপর সিদ্ধান্তের ভার দিয়ে দিয়েছিলেন।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমরা কোনো কিছু পরিবর্তন করব না। গতবার যেভাবে হয়েছে, এবারও ঠিক সেভাবে ইজতেমাটা সুসম্পন্ন করবেন। তারা উভয়েই মেনে নিয়েছেন।
“আমাদের সিদ্ধান্তে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। দুবারে আয়োজন করা হবে। জুবায়ের গ্রুপ আগামী ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি ইজতেমা করবেন। দ্বিতীয় পক্ষের ওয়াসেক পন্থীদের ইজতেমা হবে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি।”
তবে এ আয়োজন সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে তাদের বলা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান খান।
সীমিতভাবে করার বিষয়টি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “প্রথমেই বলেছি স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে, একটু দূরে বসা, মাস্ক পরা এবং টিকা নেওয়া ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবে না- এই ধরনের কাজগুলো করতে হবে।
“আমরা নেতাদের কাছে আবেদন করেছি, গতবার যে জেলা থেকে যত লোক এসেছেন, এবার যাতে এ সংখ্যাটা কমিয়ে আনেন।”
প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষে প্রশাসনকে সংশ্লিষ্টরা মাঠ বুঝিয়ে দেবেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “বাকি সময়টুকুকে মাঠ তৈরি করে দ্বিতীয় দফার জন্য তৈরি করা হবে।”
সভায় ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।