ঈদ উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তায় সব প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলছে পুলিশ।
Published : 19 Mar 2025, 08:44 PM
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসা-বাড়ি, অফিস, বিপণিবিতানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় নগরবাসীর জন্য ১৪টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
এর মধ্যে বাসা কিংবা অফিসে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পাশাপাশি অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী ও দলিলদস্তাবেজ নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রাখা অথবা প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
আগামী ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর ধরে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এর আগে-পরে (২৯ ও ৩০ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল) চার দিন ছুটি থাকছে নির্বাহী আদেশে। তার আগে ২৮ মার্চ পড়েছে শুক্রবার। শবে কদরেরও ছুটিও এদিন। সে হিসাবে ২৮ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ছয় দিনের ছুটিতে থাকবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
পুলিশ বলছে, উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে ঈদ উদযাপনে এবং বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে ‘অক্সিলারি ফোর্স’ নিয়োগ করা হয়েছে।
কোনো ধরনের ‘বেতন-ভাতা ছাড়াই’ ঢাকার বিভিন্ন শপিংমল ও আবাসিক এলাকায় দায়িত্বরত বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের প্রধানদের পুলিশের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪১৯ জনের তালিকা করেছে পুলিশ।
এই ‘অক্সিলারি ফোর্স’ এবার ঈদের দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও ডিএমপি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে।
পুলিশের নির্দেশনা
• বাসা-বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে। যেকোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে, যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার সার্বিক তদারকি করতে পারেন।
• বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ছাড়ার আগে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালা মেরে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে।
• বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং সেগুলো সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
• বাসা-বাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।
• রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
• অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
• বাসা-বাড়ি ছাড়ার আগে যে প্রতিবেশী বা পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা ঢাকায় থাকছেন, বাসার দিকে তাদের খেয়াল রাখতে অনুরোধ করতে হবে। ফোনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
• ভাড়াটেরা আগেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষে বাসায় না থাকার বিষয়টি জানাবেন।
• অনুমতি ছাড়া কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না পারে, এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে।
• বাসা-বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান ছাড়ার আগে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
• বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে।
• বাসার জানালা-দরজার পাশে কোনো গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় ঢুকতে না পারে।
• মহল্লায় বা বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে বা কোনো দুস্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।
• ঈদে মহল্লা বা বাসায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।
• জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য ডিএমপি কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করা যাবে ০১৩২০০৩৭৮৪৫, ০১৩২০০৩৭৮৪৬, ২২৩৩৮১১৮৮, ০২৪৭১১৯৯৮৮, ০২৯৬১৯৯৯৯ নম্বরে। এ ছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমেও পুলিশের সেবা পাওয়া যাবে।