পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সফরের পরবর্তী তারিখ ঠিক করা হবে, বলছে ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশন।
Published : 24 Apr 2025, 08:14 PM
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের সঙ্গে উত্তাপের মধ্যে ঢাকা সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
বৃহস্পতিবার এক বার্তায় এ তথ্য দিয়েছে ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশন।
বার্তায় বলা হয়, “অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৭-২৮ তারিখে বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না। পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সফরের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে।”
ডন জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বৈঠক করে। উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠকের পরে সংবাদ সম্মেলনে তার বাংলাদেশ ও কাবুল সফর স্থগিতের বিষয়েও কথা বলেন ইসহাক দার।
তিনি বলেন, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্মকর্তাদের তলব করেছে। এই অবস্থা দৃষ্টে বাংলাদেশ ও কাবুলে তার সফর বিলম্বিত করা হয়েছে।
দেড় দশক বাদে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে গত ১৬ এপ্রিল। ঢাকায় ওই বৈঠকে ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।
আমনা বালুচের সফরের সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দারের ঢাকা সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। কিন্তু এর মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর প্রতিক্রিয়ার পর প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
হামলার ঘটনায় ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামে একটি সংগঠন দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা।
ঘটনার পর পাকিস্তানের ওপর দায় চাপিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারত। দেশটি সার্ক ভিসা স্কিমের অধীনেও পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে সময়ও বেঁধে দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থল সীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ভারত।
এর জবাবে ভিসা, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ করেছে পাকিস্তান। দুই দেশের এমন উত্তেজনার পদক্ষেপের মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত হল।
আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আঞ্চলিক রাজনীতিসহ বিভিন্ন প্রশ্নে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্তিমিত ছিল ঢাকার।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার শাসনাবসানের পর আসা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে সেই সম্পর্ককে স্বাভাবিক ও গভীর করার।
অতীতের ‘টানাপোড়েন’ পেরিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘স্বাভাবিক সম্পর্ক’ চাওয়ার কথা ইতোমধ্যে বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকও হয়েছে। সেখানে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন তারা।