বিমানবাহিনী থেকে ১২০ জন এবং পুলিশ বাহিনী থেকে ৭২ জন বিমানবন্দরে সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।
Published : 29 Jul 2024, 07:45 PM
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা স্তিমিত হলেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ সবকটি বিমানবন্দরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
সেজন্য বাড়তি জনবল চেয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরীর দেওয়া ওই চিঠিতে বর্তমানে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যদের পাশাপাশি আরও ১৯২ জন অতিরিক্ত সদস্য চাওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে বিমানবাহিনী থেকে ১২০ জন এবং পুলিশ বাহিনী থেকে ৭২ জনকে বিমানবন্দরে সংযুক্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।
সেখানে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপদ, অবাধ ও সুসংহত বিমান চলাচল চলমান রাখা, বিমানবন্দরসংলগ্ন অপারেশনাল কার্যক্রমে স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, কক্সবাজার বিমানবন্দরসহ সিলেট, রাজশাহী ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য এয়ার সাইড, র্যাম্প সাইড এবং অ্যাপ্রোন এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক বিমানবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা অত্যন্ত জরুরি।”
আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২০ জুলাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানবাহিনীর ৪০০ এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২০০ জন সদস্যকে পালাক্রমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত করা হয়।
বেবিচকের চিঠিতে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেবিচক সামগ্রিক সাংগঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৪৬৭ জনকে নিরাপত্তা কাজে বাংলাদেশের সব বিমানবন্দরে নিয়োগ করে। ইতোমধ্যে নিয়োগকৃত জনবলের মধ্যে ১০৩ জন অন্য জায়াগায় চাকরি নিয়ে বেবিচক থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
“বর্তমানে বেবিচকের অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুসারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তসহ শাহজালালের নিরাপত্তা কাজে ৪৯৩ জনবল নিয়োজিত রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বর্তমানে বেবিচকে ১৫৩ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
এছাড়া শাহজালালের টার্মিনাল ১ ও ২ এর নিরাপত্তা কাজে প্রতি পালায় দায়িত্ব পালনের জন্য সুপারভাইজারসহ ১২৫টি পোস্টে ন্যূনতম ২৫০ জন সদস্য প্রয়োজন। আর চার পালায় দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন এক হাজার (ন্যুনতম) সদস্য।
বর্তমানে কাজে নিয়োজিত ৪৯৩ জনবলের পক্ষে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কার্যক্রম ‘সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা সম্ভব নয়’ জানিয়ে এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী বলছেন, সে কারণে বিমানবাহিনী থেকে ২২০ এবং পুলিশবাহিনী থেকে ৭২ জনকে সংযুক্ত করে মোট ৭৮৫ জন জনবল দিয়ে বর্তমান নিরাপত্তা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তারপরও ২১৫ জনের ঘাটতি থাকছে।
২০১৬ সালে নিরাপত্তা ঘাটতির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি)যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপগামী কার্গো ও যাত্রী পরিবহনের জন্য বেবিচকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নিরাপত্তা জোরদারের পর ২০১৮ সালে সে নিষধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ডিএফটি।
বেবিচকের চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল বাড়ানো আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"