ঢাকাগামী নয়টি ট্রেনের বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি বাতিল করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
Published : 27 Mar 2025, 08:19 PM
ঈদুল ফিতর ঘিরে টানা নয় দিনের ছুটিতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। সকাল থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অন্য দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ট্রেনই যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। ১৭ মার্চ যারা ঈদের অগ্রিম টিকিট কিনেছেন তারাই এদিন ট্রেনে যাত্রা করছেন।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া ঈদযাত্রার আজ ছিল চতুর্থ দিন। প্রায় সময়মত ছেড়ে গেছে রংপুর এক্সপ্রেস, নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, জামাপুর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের মত ট্রেনগুলো।
তবে, দেরিতে ছেড়েছে নীলফামারীর চিলাহাটি অভিমুখী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ট্রেনটি ঢাকায় আসতেই বিলম্ব হয়েছে। ঢাকা থেকে ছাড়তে বিলম্ব হয়নি।”
এবারের ঈদযাত্রায় ট্রেনের যথাযথ সূচি বজায় রাখতে ঢাকাগামী নয়টি ট্রেনের বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি বাতিল করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, চিলাহাটি ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে না।
সেই সঙ্গে এ বছর শতভাগ টিকেট অনলাইনে হওয়ায় কাউন্টার থেকে টিকেট কেনার ঝামেলা কমার কথা বলেছেন যাত্রীরা। তবে, ট্রেন ছাড়ার দুই ঘণ্টা আগে শোভন ও সুলভ শ্রেণির কোচে মোট আসনের ২৫ শতাংশ দাঁড়িয়ে যাত্রার টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে।
ঈদযাত্রায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টিকেট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্মসহ সব জায়গায় র্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়েছে।
ঈদের আগে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস। শুক্রবার থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত টানা নয় দিন ছুটি।
চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকা রাজশাহীর রিয়াজুল হক টিকেট কেটেছেন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অগ্রিম টিকেট কেটে রেখেছিলাম। খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয়নি। স্বচ্ছন্দে যেতে পারছি। ফিরতি যাত্রায়ও যেন ভোগান্তি না পোহাতে হয়, এটাই প্রত্যাশা।”
পরিবার নিয়ে সিলেট যাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকুরে মো. শাহ আলম। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সার্বিক ব্যবস্থাপনা তো ভালোই মনে হল এখন পর্যন্ত। তবে, মূল চাপটা তো পড়বে কাল থেকে। আজও তো অফিস ছিল। তখন আসলে বোঝা যাবে। সবার ঈদযাত্রা যেন নির্বিঘ্ন হয়।
“বছরে দুইটা ঈদ আসলেই মানুষ চেষ্টা করে শত কষ্ট হলেও গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে মিলেমিশে ঈদ করার জন্য। সে জন্যই যাওয়া।”
এবার ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩ এপ্রিল থেকে। সে দিন পাওয়া যাবে আগামী ৬ এপ্রিলের টিকিট।
একইভাবে ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ পাওয়া যাবে যথাক্রমে ৭, ৮ ও ৯ এপ্রিলের টিকিট।
তাছাড়া যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধায় বুধবার থেকে জয়দেবপুর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে জয়দেবপুরগামী ট্রেন বন্ধ রাখার হয়েছে। ঈদের এই সময় এই লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, “এবারের যাত্রীসাধারণের স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনোরকমের অসুবিধা বা বিঘ্ন ঘটছে না। যাত্রীরা সুন্দরভাবে এবং নিরাপদে ভ্রমণ মরতে পারতেছে। আজও যাত্রীদের চাপ কম না।
“ফিরতি টিকেটের ক্ষেত্রে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৩ হাজার ৬১১টি টিকেট বিক্রি হয়েছে এবং বিক্রি চলমান আছে। যেখানে যাত্রীর চাপ বেশি আছে, সেখানে স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হয়েছে।”
এবারের ঈদে সারাদেশে চলাচলকারী ১২০টি আন্তঃনগর ট্রেনের বাইরেও রয়েছে পাঁচজোড়া বিশেষ ট্রেন।
এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল, ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল, ভৈরববাজার কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ট্রেন।
এছাড়া ঈদযাত্রা উপলক্ষে ট্রেনগুলোতে বাড়তি ৪৪টি কোচ বা বগি যুক্ত করা হয়েছে বলেও রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।