এনআইডি নিক, নির্বাচন নিয়ে যেতে চাইলে তখন কথা বলব: সিইসি

“আমরা ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করব। এনআইডি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2022, 12:24 PM
Updated : 11 Oct 2022, 12:24 PM

জাতীয় পরিচয়পত্র সরকারের তত্ত্বাবধানে যাওয়া নিয়ে কে এম নূরুল হুদা কমিশনের আপত্তি থাকলেও এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের।

সরকারের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর পরদিন মঙ্গলবার সিইসি হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার বিষয়টি সরকারের। এ নিয়ে ইসির মাথা ঘামানোর কিছু নেই।”

দেড় দশক আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজটি সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়েছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনই ছিল এর ব্যবস্থাপনায়।

বিগত কমিশনের আপত্তির মধ্যেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। নতুন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন সোমবারই মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে।

সিইসি আউয়াল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা থাকবে। আমরা ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করব। এনআইডি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না।

“এখন নির্বাচনটা যদি নিয়ে যেতে চায়, যে নির্বাচনটা অন্য কেউ করবে, তখন আমি কথা বলব। এনআইডি যদি চলে যায়, এতে নির্বাচন প্রসেস যদি বিঘ্নিত হয়, তখন আমরা দেখব।”

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখভাল করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইসির প্রয়োজন হলে তারাও তা ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

সিইসি বলেন, “আইন তো এখনও হয়নি, নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট হচ্ছে এনআইডি। এনআইডির বাই প্রোডাক্ট কিন্তু ভোটার তালিকা নয়।

“এনআইডি চলে গেলে তো আমাদের ব্যাপার নয়। এটা রাষ্ট্র, সরকার এবং পার্লামেন্টের বিষয়। কাজেই এটা নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ নেই। এটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাব না। আমাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচন করা। ”

Also Read: এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্রে নেওয়ার প্রস্তাব, ইসি কর্মকর্তাদের আপত্তি

Also Read: জন্মের পরপরই মিলবে এনআইডি, আইন হচ্ছে

ভোটার তালিকার সঙ্গে এনআইডির সংযোগের কোনো প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে সাবেক সচিব আউয়াল বলেন, “যে শিশুটির জন্ম হবে সেও এনআইডি পাবে। এখন সরকার যদি একটা উদ্যোগ নিয়ে থাকে সেখানে আমাদের প্রশংসা করা দরকার।”

এদিকে আইন না হওয়া পর্যন্ত এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আইন যতদিন পর্যন্ত না হবে, ততদিন স্বরাষ্ট্রতে আসবে না। এখন যেভাবে আছে চলতে থাকবে, ওই নির্বাচন কমিশনের অধীনে।”

প্রক্রিয়া শেষ হয়ে পুনরায় মন্ত্রিসভায় আইনটি উঠতে এক মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

হৈ চৈ নিয়ে মন্তব্যে অনীহা

নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের অনেকের হৈ চৈ করার বিষয়টিকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে দেখছেন সিইসি হাবিবুল।

সিইসি বলেন, “এগুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এগুলো নিয়ে খামো খা এত কথা বলবার প্রয়োজন নাই। আপনারা আগামীর দিকে তাকান। ওখানে কিছু হয়নি; হয়ত সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এটা নিয়ে এত চিন্তা ভাবনার কোনো কারণ নাই। এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। এটা নিয়ে আপনারাও মাথা ঘামাবেন না। আমরাও মাথা ঘামাচ্ছি না।”

গত শনিবার নির্বাচন ভবনে ওই সভায় নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান ভোটে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পক্ষপাতের অভিযোগের কথা বলেছিলেন। তখন ডিসি-এসপিরা হৈ চৈ শুরু করলে বক্তব্য অসমাপ্ত রেখেই বসে পড়েন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, সে ঘটনায় ইসি বিব্রত হয়েছে।

“হৈ চৈ করাটা তাদের ঠিক হয় নাই। এটা সত্য কথা। পরিবেশটা তৈরি হওয়াটা কোনোভাবেই ঠিক হয় নাই। সাময়িকভাবে বলবো মনে একটু খারাপ লাগছে।”

“বিব্রত তো বটেই, …যেটা গেছে গেছে, ওটা নিয়ে আমরা এত বিচলিত না,” বলেছিলেন তিনি।

Also Read: হৈ চৈ হওয়ায় বিব্রত, তবে ইসি বিচলিত নয়: রাশেদা