"গালিবকে পুলিশ নিয়ে গেছে। শুনেছি আজ তাকে আদালতেও তুলেছে," বলেছেন তার বড় ভাই।
Published : 15 Feb 2025, 12:05 AM
কবি সোহেল হাসান গালিবকে পুলিশ আটক করেছে বলে স্বজনরা দাবি করলেও এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি।
নাম প্রকাশ না করে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আটকের পর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়। শুক্রবার বিকাল তাকে নেওয়া হয় আদালতে।
‘সবই তার নিরাপত্তার স্বার্থে করা হচ্ছে’ বলে দাবি ওই কর্মকর্তার।
কবি গালিবের বিষয়ে কথা বলতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান, জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনারসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
গালিবের বড় ভাই নাজমুল হুদা সেতু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "গালিবকে পুলিশ নিয়ে গেছে। শুনেছি আজ তাকে আদালতেও তুলেছে।"
পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা গালিবের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন বলেও জানান নাজমুল হুদা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না গালিবের। তার ফেইসবুক একাউন্টও ডিএক্টিভেট করা, বন্ধ রয়েছে মোবাইল ফোন নম্বরও।
এদিকে গালিবের খোঁজ না পেয়ে সাহিত্য অঙ্গনের অনেকে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তারা গালিবের খোঁজ জানতে চান।
শুক্রবার দুপুরে সাহিত্য পত্রিকা 'লোক' সম্পাদক অনিকেত শামীম তার ফেইসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে লেখেন, "গালিবের জীবন আজ বিপন্ন। তাকে রক্ষায় সচেতন লেখক-শিল্পীদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অনিকেত শামীম বলেন, "আমরা গালিবের খোঁজ পাচ্ছি না। গতকাল রাত থেকেই তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।"
ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, "তার (গালিব) একটি কবিতা নিয়ে সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝির কারণে উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী ও ধর্মান্ধ কিছু মানুষ তার জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে; তারা মব তৈরির চেষ্টা করছে। গালিব এখন কোথায় আছে কেউ হদিস করতে পারছেন না।
"আমি মনে করি, গালিবের বিরুদ্ধে যারাই আজ মব তৈরির চেষ্টা করছে, তারা বাড়াবাড়ি করছে। তাদের এই বাড়াবাড়ি ও বিশৃঙ্খল আচরণ কোনো শুভ পরিণাম বয়ে আনবে না। যদিও গালিব সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ডামাডোলে এই মব সৃষ্টিকারীদের সঙ্গেই সুর মিলিয়ে ছিল। তথাপি তারা তাকে ভুল বুঝেছে।"
২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি বইয়ে গালিবের লেখা একটি কবিতা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে 'নবীকে কটাক্ষ' করার অভিযোগ ওঠে।
বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান 'উজান'। ‘নিরাপত্তার শঙ্কায়’ তিন দিন ধরে তারা বইমেলায় স্টল বন্ধ রেখেছে।
শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে উজানের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, স্টলটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
উজানের প্রকাশক ষড়ৈশ্বর্য মুহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকার কারণেই আমরা স্টল বন্ধ রেখেছি।"
উজানের স্টল বন্ধ থাকার বিষয়ে বইমেলা টাস্কফোর্স উপকমিটির আহ্বায়ক সেলিম রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বইমেলা পরিচালনা কমিটি থেকে কোনো স্টলই বন্ধ করা হয়নি। প্রকাশকই তার স্টল বন্ধ রেখেছেন।"