সাতটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এক বিবৃতিতে ‘সমন্বিত শক্তি ও সামর্থ’ অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রেখেছেন তারা।
Published : 26 Aug 2024, 10:54 PM
বন্যার্তদের সহায়তার কাজে যুক্ত নন- এমন দর্শণার্থীদের বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলে যাওয়া রোধ কিংবা নিরুৎসাহিত করে পানিবন্দি মানুষের বিরক্তি ও হয়রানি বন্ধে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা সব পক্ষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
সাতটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সোমবার এক বিবৃতিতে ‘সমন্বিত শক্তি ও সামর্থ’ অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রেখেছেন ২৭ জন নাগরিক।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের ১২টি জেলা ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮ জনের মুত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিসহ সরকারি-বেসরকারি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক উদ্যোগের প্রশংসা করে উপদ্রুত অঞ্চলে যে ধরনের সংকট হয়ে থাকে, সে সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে করণীয় কী, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
বিবৃতিতে তুলে ধরা পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে- সমন্বিতভাবে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে পরিবহন ব্যয় কমানো, দূরবর্তী ও দুর্গম এলাকার ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক মানুষ যেমন গ্রামীণ নারী, শিশু, অসুস্থ প্রবীণ নারী-পুরুষ, প্রতিবন্ধী, দলিত, আদিবাসী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার মতো বিষয়গুলো।
তারা বলছেন, দুর্যোগের সময় অপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনা যেন না ঘটে এবং এমন তথ্য পেলে অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বন্যার্তদের পাশে সমন্বিতভাবে দাঁড়াতে হবে।
এই মুহূর্তে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠন এবং সংস্থাগুলোর কাছে এসব বিষয়ে আরও সক্রিয়তার প্রত্যাশা রেখেছেন এই বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলবেঁধে মানুষজন ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে একটি অংশকে হইহুল্লোড় করতে দেখা গেছে, যার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে রয়েছে। এসব ঘটনার সমালোচনাও হচ্ছে এবং এগুলো বন্ধের তাগিদ উঠেছে।
মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী ও ‘নিজেরা করি’ এর সমন্বয়ক খুশী কবির, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বন্যার্তদের সহায়তার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া বিবৃতিতে সই করেছেন।
আরও যাদের স্বাক্ষর রয়েছে, তারা হলেন- কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, সেন্টাল উইম্যান ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর পারভীন হাসান, বিএনডব্লিউএলএ এর নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী, অ্যাসোসিয়েশ ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর অধ্যাপক নায়লা জে. খান, মানবাধিকার কর্মী মো. নুর খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান, পিটসবার্গ ইউনিভার্সিটির মাইদুল ইসলাম, মাহিডন ইউনিভার্সিটির রোজিনা বেগম বন্যার্তদের নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া বিবৃতিতে স্বাক্ষকারীদের মধ্যে কয়েকজন।
আরও রয়েছেন সাংবাদিক সাঈদা গুলরুখ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সহসভাপতি তবারক হোসেইন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রিয় সদস্য দীপায়ন খীসা, আদিবাসী অধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহাদাত আলম ও সাঙ্গাতের মুক্তাশ্রী চাকমা।