বর্জ্যবাহী যান পুড়িয়ে দেওয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে জানান মেয়র।
Published : 23 Jul 2024, 10:49 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজধানীতে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার শিকার হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কয়েকটি আঞ্চলিক কার্যালয়ও। আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে বিভিন্ন যানবাহন, মশার ওষুধ ছিটানোর স্প্রে মেশিন; মশার ওষুধ নষ্ট করা হয়েছে, তুলে নেওয়া হয়েছে সড়কবাতি।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের হামলায় ডিএনসিসির অন্তত ২০৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। বর্জ্যবাহী যান পুড়িয়ে দেওয়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে জানান তিনি।
পুড়ে যাওয়া যানবাহনের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের জন্য সম্প্রতি জাপান ও ভারত থেকে আনা কমপেক্টর, ডাম্প ট্রাকও রয়েছে।
ডিএনসিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ডিএনসিসির অঞ্চল-১ (উত্তরা), অঞ্চল-৩ (মহাখালী), অঞ্চল-৪ (মিরপুর) এবং অঞ্চল-৫ (মোহাম্মদপুর) কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় মিরপুরে অঞ্চল-৪ এর কার্যালয়ে থাকা বর্জ্য পরিবহনের ৩০টিসহ ৪০টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অঞ্চল-৫ কার্যালয়ের একটি গাড়ি, একটি মোটরসাইকেল, মশক নিধনের কীটনাশক, মহাখালীতে অঞ্চল-৩ কার্যালয়ের তিনটি গাড়ি, দুটি মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর ভবন ভাঙচুর হয়েছে।
আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ডিএনসিসির উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার এবং মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টার। মহাখালী কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে আগুন দেওয়ায় হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাপান থেকে আনা কমপেক্টর অন্তত পাঁচটি গাড়ির কাজ করতে পারে। ফলে সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
“আমাদের কনটেইনারবাহী গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ২১টি হাইড্রোলিক লেডারের মধ্যে ৯টি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কর্মকর্তাদের ব্যবহারের ৯টি এসইউভি পুড়িয়েছে। দুটি কমিউনিটি সেন্টার, রামপুরায় একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে আগুন দিয়েছে তারা।”
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের মেকানিক্যাল বিভাগের গাড়িগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করছি। গাড়ি যেহেতু কম, আমাদের শিফট বাড়িয়ে কাজ করব। মঙ্গলবারের মধ্যে সড়কে পড়ে থাকা বিভিন্ন বর্জ্য আমরা পরিষ্কার করে ফেলব।”
মঙ্গলবার ডিএনসিসি অঞ্চল-৪ কার্যালয়ে গিয়ে শুক্রবার চালানো তাণ্ডবের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। সেখানে থাকা প্রতিটি কমপেক্টর, কনটেইনার ক্যারিয়ার, ডাম্প ট্রাক পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পোড়ানো হয়েছে আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি মাইক্রোবাস।
শুক্রবারের হামলার সময় সেখানে ছিলেন নগর সংস্থার গাড়ি চালক ইলিয়াস খান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার, বৃহস্পতিবার আন্দোলনের সময় ছাত্ররা এদিকেই ছিল। কিন্তু সেদিন কেউ ডিএনসিসির কার্যালয়ে হামলা করেনি। তাই শুক্রবারের হামলায় ছাত্ররা ছিল না বলে মনে করেন তিনি।
“সাড়ে ৪টা-পৌনে পাঁচটার দিকে একদল লোক আমাদের মেইনগেট টপকে ভেতরে চলে আসে। এরা গেইট খুলে দিলে আরও শতশত মানুষ চলে আসে এখানে। তারা সবগুলো গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। প্রথমে তিনটা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখানে ৩০টি গাড়িতে আগুন দেয়। আর ১৭টি গাড়ি ভাঙলেও সেগুলোতে আগুন দেয়নি। তাণ্ডব দেখে আমরা দৌড়ে চলে যাই। আমাদের একজন ড্রাইভারকেও মেরে জখম করে তারা।”