“আমরা সবাই জনগণের টাকায় বড় হয়েছি৷ সুতরাং জনগণের প্রতি আমাদের অনেক দায়বদ্ধতা আছে৷"
Published : 05 Mar 2025, 03:35 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেছেন, তিনি এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা চান, যেখানে শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখী হতে হবে না।
উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি।
সদ্য বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব খ ম কবিরুল ইসলাম ফুল দিয়ে নতুন উপদেষ্টাকে বরণ করে নেন।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সি আর আবরার বলেন, "অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছেন, শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। কেমন শিক্ষা ব্যবস্থা দেখতে চান৷ আমি বলব - আমি স্বপ্ন দেখি এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থার যেখানে আমাদের ছাত্র- ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পারে৷"
নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, "দেশে বড় রকমের একটা পরিবর্তন হয়েছে৷ আমরা ভাবিনি আমাদের জীবদ্দশায় এভাবে মুক্তভাবে কথা বলতে পারব৷ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যে আমাকে এই দায়িত্বটা দিয়েছেন, সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন- সামনের যে জার্নিটা ইজি হবে তা নয়৷
"শিক্ষা একটা বিশাল জগৎ৷ আমরা সবাই জনগণের টাকায় বড় হয়েছি৷ সুতরাং জনগণের প্রতি আমাদের অনেক দায়বদ্ধতা আছে৷"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সি আর আবরার অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) নির্বাহী পরিচালক।
রোহিঙ্গা শরণার্থী, অভিবাসী শ্রমিক, বাংলাদেশের উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্বর মত বিষয় রয়েছে তার গবেষণার বিষয়ের মধ্যে।
এক সময় মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সভাপতির দায়িত্বেও সামলেছেন অধ্যাপক আবরার। ক্ষমতার পালাবদলের পর গতবছরের শেষভাগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে যে সার্চ কমিটি করা হয়েছিল, সেখানে সদস্য হিসেবে ছিলেন তিনি।
সি আর আবরার বলেন, "আমি মনে করি শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম৷ আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের ছাত্রছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পারে৷ দেশে থেকেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারবে৷
“আমি জানি এটা হয়তো দ্রুত হবে না৷ কিন্তু এর একটা ভিত্তিপ্রস্তর আমরা তৈরি করতে চাই৷"
দায়িত্ব হস্তান্তরকালে সদ্য বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "শিক্ষা কমিশন অতীতে ৫ থেকে ৬ টি হয়েছে৷ তারা কি সমস্যার সমাধান করেছে? কয়েকজনকে বসিয়ে দিয়ে কমিশন করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে?
“তাদের সকল কিছু বুঝতেই তো অনেক সময় চলে যাবে৷ আমাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একটা কমিশন হওয়া উচিত৷"
তিনি বলেন, "অনেকেই জানে না বেসরকারি খাতের শিক্ষকদের কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই৷ নায়েমসহ এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শুধু সরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ অথচ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেশি৷ সুতরাং নতুন কমিশন এসে এসব বিষয় বিবেচনা নেবে৷
"কারিকুলাম ভালো করার পর প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকলে তো কাজ হবে না৷ শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট হতে অনেক সময় লাগে৷ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই বিশৃঙ্খল ও অবিন্যস্ত৷"