ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
Published : 27 Apr 2025, 05:50 PM
প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার দুই আসামিকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন রোববার আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া ১৯ বছর বয়সী দুই আসামি হলেন-আলভী হোসেন জুনায়েদ এবং আল আমিন সানি (১৯)।
এদিন জুনায়েদ এবং সানির সাত দিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার ইন্সপেক্টর এ কে এম মঈন উদ্দিন।
আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী জাকির হোসেন জামিনের আবেদন করেন।
মামলার এজাহারের আসামিরা হলেন- মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)।
তবে জুনায়েদ ও সানির নাম মামলার এজাহারে নেই।
আসামি পক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, “সার্বিক পরিস্থিতিতে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হওয়া উচিত। যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে সাহস না করে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পারভেজ হত্যার সাথে জড়িতদের নাম এজাহারে উল্লেখ করেছে। এ দুই আসামির নামে এজাহারে নেই। তাদের অনুমান এবং সন্দেহের ভিত্তিতে প্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জামিন আদেশ হওয়া আবশ্যক বটে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নাই। তারা জামিন পাওয়ার হকদার। তাদের জামিনের প্রার্থণা করছি।"
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
যা ঘটেছিল
গত ১৯ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। তাদের পাশে সদ্য ভর্তি হওয়া ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বন্ধু ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী ছিলেন। এক পর্যায়ে দুই ছাত্রী অভিযোগ করেন পারভেজ তাদের উত্যক্ত করেছেন। তারা বিষয়টি প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির প্রক্ট্ররকে জানান।
এরপর প্রক্টর পারভেজকে ডেকে নেন। প্রক্টর অফিসে পারভেজ দাবি করেন, তিনি বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের আলাপের বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন, কাউকে উত্ত্যক্ত করেননি। এক পর্যায়ে ওই দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলে পারভেজ ক্ষমাও চান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সেখানেই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পারভেজকে হুমকি দেন। প্রক্টরের অফিস থেকে বেরিয়ে আসার পর কিছু বহিরাগত এসে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে ধারালো কিছু দিয়ে পারভেজের বুকে আঘাত করে তারা পালিয়ে যান।
পরে রক্তাক্ত পারভেজকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক আগেই মৃত্যু হয়ে বলে জানিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের মামাত ভাই হুমায়ুন কবীরের করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া নাম না দিয়ে আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।