“আমার সার্ভিসের মধ্যে অন্য কেউ আসবেন না, আমরাও কোথাও যাব না,” বলেন বিএএসএ সভাপতি।
Published : 22 Dec 2024, 05:46 PM
উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের অনুপাত কমানোর সম্ভাব্য সুপারিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা পড়লে ‘সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান’ ঘটবে।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “এই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা প্রতিবেদন জবা দেব ইনশাল্লাহ।
“এটা জমা দেওয়ার পর সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না, এটা স্পষ্ট। প্রতিবেদনটা এখন একটা পর্যায়ে এসেছে।”
ক্ষমতার পালাবদলের পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথম ধাপে যে ছয় খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়, তার মধ্যে জনপ্রশাসন একটি।
কমিশনের প্রধান হিসেবে আছেন আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী; মোখলেস উর রহমান আছেন সদস্য সচিব হিসেবে।
গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, "উপসচিবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৭৫ শতাংশ ও অন্য ক্যাডারের জন্য ২৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়।
“এই অনুপাতে পরিবর্তন এনে প্রশাসনের জন্য ৫০ শতাংশ ও অন্য ক্যাডারদের জন্য ৫০ শতাংশ বরাদ্দ রাখার সুপারিশ করা হবে।”
সম্ভাব্য এই সুপারিশের কথা জানার পর আন্দোলনে নামে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)।
রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে প্রশাসন ক্যাডারের কয়েকশ কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, “মূল কথা হল, কমিশন এর আগে আরও ২৩টা হয়েছে, এটা ২৪তম কমিশন। এর কাজ শেষ পর্যায়ে।
সংস্কার কমিশনের এই সদস্য সচিব বলেন, “ইতোমধ্যে অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে বসা হয়েছে। এখন প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে বসার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
“চলতি সপ্তাহেই বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বসবে কমিশন। এরপর কারো মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকবে না।”
ভুল বোঝাবুঝির সমাধান বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “তথ্যগত কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না।”
প্রশাসন ক্যাডারের বিক্ষোভের বিষয়ে এক সাংবাদিক সচিবের কাছে জানতে চান, সরকারি আইন বা বিধি অনুযায়ী কেউ এভাবে বিক্ষোভ দেখাদে পারে কিনা?
জবাবে সচিব বলেন, “বিএএসএ একটা সংগঠন; তারা আমার এখানে আজ এসেছেন। আপনাদের উপস্থিতিতে কথা বলেছেন, তারা হয়ত দল বেঁধে এসেছে। এটা একটি পজেটিভ স্টেপ।”
বিএএসএ সভাপতি আনোয়ার উল্লাহ বলেন, “এখানে দুই মন্ত্রণালয়ের ৩০০ কর্মকর্তা আছেন। এটা একটা শোভনীয় পন্থা, এটাকে ওইভাবে দেখবেন না।”
নিজেদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে আনোয়ার উল্লাহ বলেন, “আমার সার্ভিসের মধ্যে অন্য কেউ আসবেন না, আমরাও কোথাও যাব না।
“একটা সহজ হিসাব, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন; ১৯টা সাবজেক্ট আপনাকে দেয়া হয়েছিল। আপনি দুই বছর পর যদি বলেন, আমি সয়েল সায়েন্সে ছিলাম, এখন বায়ো কেমেস্ট্রিতে যাব। এটা কি যৌক্তিক?”
১৯৭৫ সালের সার্ভিস অ্যাক্টে মেধার ভিত্তিতে উপসচিব পদে পদোন্নতির বিধান ছিল। উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য প্রথমে ২৫ শতাংশ এবং পরবর্তী সময়ে ৭৫ শতাংশ কোটা রেখে বিধিমালা জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।