“ভোগান্তি থেকে আমরা আবার মুক্তি পেলাম,” বলেন যাত্রী সুনীল।
Published : 25 Aug 2024, 09:25 AM
এক মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঢাকায় মেট্রোরেলের চাকা ঘুরল।
রোববার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেনটি মতিঝিলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল করছে।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এমআরটি-৬) অতিরিক্ত পরিচালক জাকারিয়া রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল থেকেই নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল করছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।"
মেট্রোরেল চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে। রোববার সকালে মিরপুর ১১ নম্বর ও শেওড়াপাড়া স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেল।
মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা ডা. শেখ মো. বেলাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি নিয়মিত মতিঝিল যাই মেট্রোতে করে। এটাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। মাঝখানে বন্ধ থাকায় বেশ ঝামেলা হয়েছে।
“বাসে যেতে দীর্ঘ সময়, যানজট। এখন আবার ট্রেন চালু হওয়ায় আমাদের ভোগান্তি কমল।"
সেনপাড়ার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বললেন, “এটা চালু হওয়ায় আমাদের এলাকায় প্রাণ ফিরে এসেছে। কিছু মিথ্যা তথ্যও সামনে চলে এসেছে।
“বলা হচ্ছিল মেট্রো চালু হতে অনেক সময় লাগবে। এখন দেখা যাচ্ছে, সেগুলো ভুল বা অপতথ্য ছিল।"
মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আরিফা আক্তার শেওড়াপাড়া স্টেশন থেকে মতিঝিল যাবেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “মেট্রোরেল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আসে, ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
“বাসে গেলে তো আমাদের সময় বেশি লাগত, কষ্ট বেশি হতো। অনেক সময় অফিসে যেতে দেরি হয়ে যেত। এখন আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে এল।"
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ নম্বর ও কাজীপাড়া স্টেশন আপাতত বন্ধ থাকছে। সেই কারণে মিরপুর এলাকায় শেওড়াপাড়া ও মিরপুর ১১ নম্বর স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বেশিই দেখা গেল।
মিরপুর ৬ নম্বর এলাকার বাসিন্দা সুনীল সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই রাস্তায় মানুষের ভোগান্তি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এটা থেকে আমরা আবার মুক্তি পেলাম।
“তবে আমাদের স্টেশন বন্ধ থাকায় ১১ নম্বর পর্যন্ত আসতে হচ্ছে- এটা একটা ঝামেলা।"
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮ জুলাই বিকালে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল। পরদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলা চালানো হয় পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনে। এরপর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ‘বৈষম্যহীন’ বেতন কাঠামোসহ ছয় দাবিতে ৮ অগাস্ট থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন মেট্রোরেলের ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা। তারা গত মঙ্গলবার কাজে ফেরেন।
গত ১১ অগাস্ট মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মেট্রোরেল পুরোদমে চালুর আগে পরিস্থিতি যাচাই-বাছাইয়ে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর প্রস্তুতি চলছে। আর পরীক্ষামূলক চলাচল শেষে ১৭ অগাস্ট থেকে তা চালু করতে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কিন্তু রেল চালুর জন্য কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর শনিবার ১০টি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। এর একদিন পর শুরু হলো ট্রেন চলাচল।