“আমরা চেয়েছি, আমাদের সন্তানেরাও যেন দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে বড় হয় এবং মানুষের প্রতি যেন তাদের মধ্যে ভালোবাসা জন্মায়, এ জন্যই আসা।”
Published : 25 Aug 2024, 12:10 AM
ধানমন্ডি থেকে সানবিম স্কুলের শিক্ষার্থী রাফায়েল ও অর্থরা এসেছিল বন্যার্তদের জন্য কাপড় নিয়ে। ছোট্ট হাতে নিজেরাই কাপড় ভাঁজ করে প্যাকেটও করছিল।
কাপড় ভাঁজ করার ফাঁকে রাফায়েল জানাল, বন্যায় আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই তারা এসেছে বাবা-মায়ের সঙ্গে। পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন চিকিৎসক দম্পতি তুষার মাহমুদ ও হুমায়রা হৃদি।
হুমায়রা হৃদি বলেন, “আমরা ফেইসবুকে পোস্টার দেখেছি, এখানে শিশুদের জন্য কাপড় সংগ্রহ করা হবে। সেই সঙ্গে পাপেট শো হবে, এ জন্যই আসা।
“আমরা চেয়েছি, আমাদের সন্তানেরাও যেন দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে বড় হয় এবং মানুষের প্রতি যেন তাদের মধ্যে ভালোবাসা জন্মায়, এ জন্যই আসা।”
শিশুদের মধ্যে সামাজিক দায়বোধ বাড়ানোর তাগিদ এবং বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে 'শিশুদের জন্য শিশুরা' শিরোনামে এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকার জলপুতুল পাপেটস। বৃহস্পতিবার থেকে হাতিরপুলে তাদের কার্যালয়ে শিশুদের জন্য কাপড় সংগ্রহ করছে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি সামনে আয়োজন করা হয় পুতুল নাচ ও শিশুদের জন্য কাপড় সংগ্রহের আয়োজন।
এ সময় রাফায়েল ও অর্থরার মত অনেক শিশু বাসা থেকে বানভাসি শিশুদের জন্য কাপড় নিয়ে আসে।
সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া দিনব্যাপী এই আয়োজনে পাপেট থিয়েটার পরিবেশন করে জলপুতুল পাপেটস, যোগ পাপেট থিয়েটার, কাকতাড়ুয়া, ইনভেনটর পাপেটস।
জলপুতুল পাপেটসের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সাইফুল ইসলাম জার্নাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বানভাসি মানুষের জন্য অনেকেই কাজ করছেন। আমরা চেয়েছি তরুণদের সঙ্গে শিশুরাও যেন যুক্ত হয়। এতে ছোটবেলা থেকেই তাদের মধ্যে মানুষের জন্য দায়িত্ববোধ জাগ্রত হবে।”
সংগৃহীত কাপড়গুলো ইয়াং লিডারস প্লাটফর্ম এবং 'লাইট অফ হোপ' নামে দুটি প্লাটফর্মের মাধ্যমে বন্যার্তদের পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান সাইফুল।
মোহাম্মদপুর থেকে বেশ কিছু কাপড় নিয়ে এই আয়োজনটিতে আসেন আইনজীবী শাফি ইসলাম ঊষা। তিনি বলেন, “মানুষের বিপদে মানুষ হয়ে পাশে থাকাটাই হচ্ছে এখানে আসার উদ্দেশ্য। আমি নিজে কিছু কাপড় এনেছি, আত্মীয়-স্বজনদের বাসা থেকেও সংগ্রহ করে কিছু এনেছি। বন্ধু-স্বজনদের কেউ কেউ ব্যস্ততার জন্য আসতে পারেনি, তাদের দেওয়া কাপড়ও আমি এখানে পৌঁছে দিয়েছি।”
পাপেটিয়ার আজমাইন আজাদ কথা বলেন, “সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে অংশ নিয়েছে, এটা অভূতপূর্ব। যে কোনো বিপদে মানুষের ঐক্য জরুরি। এখানে বিশেষ দিক হল বন্যার্ত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে শহরের শিশুরা। এই শিশুরা মানুষকে ভালোবেসে একটা চমৎকার সমাজ গড়বে বলেই বিশ্বাস করি।”
সব মিলিয়ে তিন দিনের আয়োজন থাকবে জানিয়ে প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আসিফ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্যা পরবর্তী সময়েও শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক দিক নিয়ে এবং শিশুদের শিক্ষা উপকরণ নিয়ে আমরা কাজ করব।”