“দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদ কমপ্লেক্স ও টঙ্গী ইজতেমার ময়দান শতকরা ৯০ ভাগ ওলামাপন্থি তাবলীগের সাথীদের পরামর্শে ‘শুরায়ে নিজাম’র জিম্মায় ছেড়ে দিতে হবে।”
Published : 12 Nov 2024, 04:23 PM
ঢাকার কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে তাবলীগ জামাতের সাদপন্থিদের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুবায়েরপন্থি হিসেবে পরিচিত অপর পক্ষ।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাবলীগের জোবায়েরপন্থিদের এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী দাবি করেন, মাওলানা ইলিয়াসের কর্মপদ্ধতি অনুসরণকারী জোবায়েরপন্থিরা বাদে তাবলীগ জামাতের অন্য কোনো পক্ষ নেই।
‘দাওয়াত ও তাবলীগের হেফাজতের লক্ষ্যে’ ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ এই সংবাদ সম্মেলন করে।
সাদপন্থিদের ‘হাদিসের অপব্যখ্যাকারী’ আখ্যায়িত করে তাদের দাওয়াত ও তাবলীগে অংশ থাকার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষ দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভি এবং বাংলাদেশের কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীদের বিরোধের শুরু ২০১৯ সালে।
আগে এক মঞ্চ থেকে একবারই বিশ্ব ইজতেমা হলেও মতভেদের কারণে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাঝে কোভিড মহামারীর কারণে ইজতেমা দুই বছর বন্ধও রাখা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে ফের ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বের আয়োজনে।
এর মধ্যেই গত ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘ওলামা-মাশায়েখদের ইসলামি মহাসম্মেলন' থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানান জুবায়েরপন্থিরা, যারা নিজেদের ‘শুরায়ে নিজাম’ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানান তার অনুসারীরা।
৫ নভেম্বরের ‘ঘোষণাপত্রের’ কথা স্মরণ করে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে ফজলুল করিম কাসেমী বলেন, “টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে মানুষ হত্যাকারী ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সাদপন্থিদের কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীতে স্থান পাওয়ার কোনো অধিকার নেই, থাকার কোনো প্রশ্নই নেই। কাকরাইল ও টঙ্গী ইজতেমার মাঠ সবসময় ‘ওলামা বিদ্বেষী’ সাদপন্থি মুক্ত রাখতে হবে।”
বিগত ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ আমলে যারা শেখ হাসিনার জন্য মাঠে ময়দানে কাজ করেছে, সেইসব ‘সুবিধাভোগী ও মতলববাজদের’ কোনো পরামর্শ না নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ফজলুল করিম বলেন, “সন্ত্রাসী সাদপন্থিদের নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদ কমপ্লেক্স ও টঙ্গী ইজতেমার ময়দান শতকরা ৯০ ভাগ ওলামাপন্থি তাবলীগের সাথীদের পরামর্শে ‘শুরায়ে নিজাম’র জিম্মায় ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টার নোটিসে ঢাকা অচল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।”
একইসঙ্গে সাদপন্থিদের ‘তওবা করে’ ‘দ্বীনের সহি’ পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি।