Published : 05 May 2025, 03:25 PM
জুলাই আন্দোলনের এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানিতে চিৎকার-চেঁচামেচি করেছেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম।
সোমবার সকাল ১০টার পর ঢাকার মহানগর হাকিম পার্থ ভদ্রের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। তবে তখনও আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়নি।
এদিন হাজী সেলিমকে কারাগার থেকে এনে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। এসময় তার মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং দুই হাত পিছমোড়া দিয়ে বাধা ছিল।
এজলাসে নেওয়ার পর তার হাতে পত্রিকার একটি পৃষ্ঠা দেখা যায়। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে এক পুলিশ সদস্য পত্রিকার পৃষ্ঠাটি হাজী সেলিমের হাত থেকে নিয়ে নিতে চান।
এসময় চিৎকার করে ওঠেন হাজী সেলিম। বাকশক্তি হারানো হাজী সেলিম পুলিশ সদস্যকে লক্ষ্য করে চিৎকার করতে থাকেন। পরে তার আইনজীবী তাকে শান্ত করেন।
এরপর জুলাই আন্দোলনের মনির হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। ওই আবেদন করেছিলেন শাহবাগ থানার এসআই মাইনুল ইসলাম খান পুলক।
আদেশ শেষে হাজী সেলিমকে হাজতখানায় নেওয়ার সময়ও বাধে বিপত্তি। মাথায় হেলমেট পরানোকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে ফের চিল্লাপাল্লা শুরু করেন তিনি। পরে শান্ত হলে ধীরে ধীরে এজলাস থেকে নামিয়ে তাকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন হাজী সেলিমকে দেখতে আদালতে আসেন বড় ভাইয়ের মেয়ে। ইশারায় কথা বলা সেলিম ভাতিজিকে কাছ থেকে আদর করতে না পেরে উড়ন্ত চুম্বন দেন।
এ বিষয়ে হাজী সেলিমের আইনজীবী প্রাণনাথ বলেন, “আমার মক্কেল কারাগারে ডিভিশন পেয়েছেন। এজন্য তাকে পত্রিকা দেওয়া হয়।
“তিনি পত্রিকা পড়তে গিয়ে জাহাজের টেন্ডার সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেখতে পান। যেহেতু তার জাহাজ রয়েছে, সেটার খোঁজ খবর নিতেই তিনি পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি কেটে নিয়ে আসেন।”
উড়ন্ত চুম্বনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণনাথ বলেন, “বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি।”
মনির হত্যা মামলার বিবরণ অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনের শেষ দিন ৫ অগাস্ট পলাশী সংলগ্ন ঢাকা মেডিকেলের চৌরাস্তায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন। এসময় গুলিতে মনির হোসেন নিহত হন।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী রুজিনা আক্তার বাদী হয়ে গত ১৪ মার্চ ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ৩৫১ জনের নামে আদালতে মামলা করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে হাজী সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।