ইতালিয়ান কোম্পানি শেয়ার হস্তান্তর না করলে চীনা ব্যাংক অর্থ ছাড় করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
Published : 16 May 2024, 01:16 PM
ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির হাতে থাকা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের ওপর দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছে আপিল বিভাগ।
এর ফলে ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আট বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়।
শুনানিতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ, ইমতিয়াজ ফারুকসহ কয়েকজন।
সিনোহাইড্রো করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।
পরে মেহেদী হাছান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আপিল বিভাগ হাই কোর্টের জাজমেন্টটা এখনও পান নাই। জাজমেন্ট পাওয়া সাপেক্ষে দুই সপ্তাহের স্ট্যাটাসকুয়ো দিয়েছে। দুই সপ্তাহ পর মামলাটা অ্যাপিলেট ডিভিশনের কজ লিস্টে আসবে পরবর্তী শুনানির জন্য।
“এই সময়ের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তর হবে না, তাই ব্যাংক বলে দিয়েছে, তারা ফাইন্যান্স করবে না। তার মানে কাজ বন্ধ থাকবে।”
মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ২০১৩ সালে ইতালিয়ান ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কার্যাদেশ দেয়। কিন্তু তারা কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হলে দুই চীনা কোম্পানির সঙ্গে মিলে একটি কোম্পানি করে।
ওই তিনটা কোম্পানি মিলে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়। সেখানে শর্ত ছিল, অংশীদারদের কেউ জানুয়ারি বা জুনে ঋণের সুদ দিতে ব্যর্থ হলে সুদের ওই অংশটা বাকি দুই গ্যারান্টারকে দিতে হবে এবং সুদ দিতে ব্যর্থ কোম্পানির শেয়ার বাকিদের কাছে চলে যাবে। বাংলাদেশ সরকারও তাতে অনুমোদন দেয়।
মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ২০২৩ সালে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। সে কারণে ঋণদাতা চীনা ব্যাংক ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারি ইতালিয়ান কোম্পানিকে চিঠি দিলে তারা আরবিট্রেশানে যায়।
“ওই আরবিট্রেশনের প্রেক্ষিতে তারা হাই কোর্ট ডিভিশনে মামলা করে যাতে শেয়ার হস্তান্তর স্থগিত হয়। হাই কোর্ট মামলাটি ‘চলার যোগ্য না’ বলে রুল খারিজ করে দেয়। তখন তারা আপিল বিভাগে আসে।”
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। পুরো কাজ শেষ হলে মোট ৩১টি র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন ওঠানামার সুযোগ হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ২ সেপ্টেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ উদ্বোধন করেন। পরদিন বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়া হয়। পরে কারওয়ান বাজার (এফডিসি) অংশে নামার সংযোগ সড়ক বা ডাউন র্যাম্প খুলে দেওয়া হয় এ বছরের ১৯ মার্চ।
এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
বাকি ব্যয়ের মধ্যে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ, চীন শ্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল গ্রুপ ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন ১৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল।