“হাওর নিয়ে সবসময় ঠেলাঠেলি হয়; কোনো মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিতে চায় না।”
Published : 10 Dec 2024, 09:52 PM
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জীবন ও জীবিকা ‘নষ্ট করে’ হাওর ইজারা দেওয়ার ‘প্রশ্নই আসে না’।
রাজধানীতে মঙ্গলবার ‘জাতীয় হাওর সংলাপ ২০২৪’-এ তিনি বলেন, “আমি মনে করি, হাওর ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।”
সিরডাপ মিলনায়তনে যৌথভাবে এই সংলাপ আয়োজন করে তিন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এএলআরডি, বারসিক ও বেলা।
ফরিদা আখতার বলেন, “যখন মৎস্যজীবীর কথা বলা হয় তখন ‘প্রকৃত মৎস্যজীবী’, ‘অরিজিনাল মৎস্যজীবী’– এরকম কথা ওঠে। এর মানে হচ্ছে এ পেশায় অনেকেই অন্যায়ভাবে প্রবেশ করেছেন।
“যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী, তাদের মূল্যায়ন হয়নি। হাওর নিয়ে সবসময় ঠেলাঠেলি হয়; কোনো মন্ত্রণালয় দায়িত্ব নিতে চায় না। হাওর রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। হাওর রক্ষায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দায়িত্ব পালন করবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “মানুষের জীবন ও জীবিকা নষ্ট করে ইজারা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। যেসব এলাকায় সমস্যা, আপনারা আমাদের জানাবেন প্লিজ; আমরা সেখানে যাব।”
তিনি জানান, বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলে ১৪৩ প্রজাতির দেশি এবং ১২ প্রজাতির বিদেশি মাছ রয়েছে। কয়েক প্রজাতির মিঠা পানির চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রকার শামুক-ঝিনুকের আবাস রয়েছে সেখানে।
সেখানে ১২৯ প্রজাতির দেশীয় ও ১২৮ প্রজাতির বিদেশি পাখি রয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে ২৯ প্রজাতির। এছাড়া ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং কয়েক প্রজাতির ধানও হয় হাওরে।
উপদেষ্টা বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে হাওরে ধান উৎপাদনে কীটনাশক ব্যবহার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
“মেশিন দিয়ে ফসল কাটা হচ্ছে। এই মেশিন হাওরে নামার ফলে মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি কৃষি উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, হাওরের ধানে যেন কীটনাশক না দেয়। মা মাছ রক্ষা করতে হবে।”
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার সভাপতিত্বে সংলাপে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম, শেয়ার দ্য প্ল্যানেট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তেৎসু চুচুই, বেলা'র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি ড. লেলিন চৌধুরী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান মো. বেলাল উদ্দীন বিশ্বাস।