আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
Published : 13 Aug 2024, 08:21 PM
ক্ষমতার পালাবদলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি ও বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান।
মঙ্গলবার ডিএসসিসির মেয়রের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন ডিএসসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
আশিকুর রহমান তার পদত্যাগপত্রে বলেন, “সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৪ ধারা অনুসারে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমি অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম। প্রযোজ্য আইন অনুসারে আমার ঐচ্ছিক অবসর সময়মত সদয় বিবেচনার জন্য বিনীত অনুরোধ করলাম।”
তার পদত্যাগের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ডিএসসিসির মেয়র বর্তমান প্রেক্ষাপটে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় প্রধান প্রকৌশলীর অবসরের আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। আশিকুর রহমানের ঐচ্ছিক অবসরের আবেদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
গণআন্দোলনে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় আওয়ামীপন্থী বা আওয়ামীলীগ সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি ও পদত্যাগের হিড়িক চলছে।
আশিকুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে রোববার ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের একটি অংশ। নগর ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘সচেতন নাগরিকের ব্যানারে’ পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে।
প্রধান প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেল) খায়রুল বাকেরের দপ্তরের দরজায় লাগানো হয়েছে ‘প্রবেশ নিষেধ’ লেখা পোস্টার।
ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান এবং খায়রুল বাকের কার্যালয়ে আসছেন না। এর মধ্যে দেয়ালে দেয়ালে আশিকুর রহমানের ‘দুর্নীতির শ্বেতপত্র’ টাঙানো হয়েছে।
সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, আশিকুর রহমান মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নির্মাণব্যয় ৮০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা করেছেন। দুর্নীতির অভিযোগে ওয়ান ইলেভেনের পর তিনি পালিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। সিটি করপোরেশনের নানা প্রকল্পে অনিয়ম-র্নীতির মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট, প্লটসহ নানা ধরনের সম্পদ গড়ে তুলেছেন। ২০২৩ সালে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে তিনি পদোন্নতি পান।
ডিএসসিসির একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক উন্নয়ন কাজ আশিকুর রহমানের জন্য আটকে গেছে। প্রকৌশলী, কর্মীরা তার কাছে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
“মূল দাবি- আমরা সবাই নির্যাতিত তার কাছে। যেসব কর্মচারী ছিল, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমাদের প্রকৌশলীদের দুর্ব্যবহার, নির্যাতন করত। এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।”
তাকে অপসারণের দাবি আগে তোলেননি কেন- এমন প্রশ্নে ওই প্রকৌশলী বলেন, “আমরা এর আগেও অনেকবার মেয়র মহোদয়, সিইও স্যারকে বলেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি, তার (আশিকুর) যোগাযোগ অনেক বেশি।
“কিন্তু এখন এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন, এজন্য আমরা দাবিটি আবার জানিয়েছি। আমাদের দাবির সঙ্গে দুজন বাদে সব প্রকৌশলী একাত্মতা জানিয়েছেন।”
পুরনো খবর –