২০১৮ সালের অগাস্টের ওই ঘটনার মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে গ্রেপ্তার যুবকের।
Published : 24 Sep 2024, 02:02 AM
সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় অভিযোগপত্রে নাম থাকা আসামি মো. সিয়াম হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ।
ডিএমপির পাঠানো বার্তায় বলা হয়, ২০১৮ সালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে ২৬ বছর বয়সী সিয়াম হাসানের।
ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী গণ আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলার এজাহারনামীয় আসামিও সিয়াম বলে জানানো হয়েছে।
মোহাম্মদপুরে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাসায় ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে নৈশভোজের দাওয়াতে গিয়ে বার্নিকাট হামলার শিকার হন।
পরে ১০ অগাস্ট রাতে বদিউল আলম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই হামলার আড়াই বছরের মাথায় ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি আদালতে ৯ জনের নামে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আব্দুর রউফ।
পরের বছর ২০২২ সালের ১ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষের বেশ কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
একই বছরের ৪ ডিসেম্বর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। সাক্ষী ড. বদিউল আলম মজুমদার, খুশি বেগম ও মাহবুবুল আলম মজুমদার তাদের জবানবন্দিতে ইশতিয়াক মাহমুদ নামের একজনের জড়িত থাকার কথা বলেন।
কিন্তু অভিযোগপত্রে তার নাম না থাকায় গত ২৭ ডিসেম্বর মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য রাষ্ট্রপক্ষের তরফ থেকে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আগের আসামিদের সঙ্গে ইশতিয়াককেও আসামি করা হয়। পরে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদকেও অভিযুক্ত করে নতুন করে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।
এ মামলায় অভিযুক্ত বাকি আসামিরা হলেন- নাইমুল হাসান রাসেল, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খান কাজল, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি।
তাদের মধ্যে নাইমুল হাসান রাসেল মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি, বাকিরাও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাসায় নৈশভোজের দাওয়াতে গিয়ে বার্নিকাট হামলার শিকার হন। ওই রাতে ‘নৈশভোজের নামে’ তিনি গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে খবর পায়’ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
আনুমানিক রাত ১১টায় ছাত্রলীগের নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ইটপাটকেল ছোড়ে। তারা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ছাড়েন।
সেখানে অভিযোগে বলা হয়, ওই রাতে ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা করে। তারা ড্রাইভার ও বদিউলের ছেলের ওপর আক্রমণ করে। বার্নিকাটের গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে এবং ঢিল ছোড়ে। এ সময় পিস্তল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে আগুন দেওয়ার উসকানি দেয় দুর্বৃত্তরা।
বার্নিকাটের গাড়ি দ্রুত বেগে স্থান ত্যাগ করার পর দুর্বৃত্তরা বাদী বদিউলের বাসায় হামলা চালায়। জানালার কাচ ভাঙচুর করে। বাসার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
ঘটনার দিন বদিউলের বাসায় বার্নিকাট ছাড়াও কামাল হোসেন, তার স্ত্রী হামিদা হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলছিল সে সময়।
আরও পড়ুন
মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা: প্রতিবেদন দিতে আরও এক মাস পেল ডিবি