এদিনই তাদের অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
Published : 12 Sep 2024, 03:17 PM
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃথক হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম সাইফুর রহমান।
আদাবর থানার পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যা মামলায় মেনন ২৭ অগাস্ট থেকে ৬ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। আর আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন ইনু।
এদিকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজের ছাত্র ওমর ফারুক হত্যার সূত্রাপুর থানার মামলায় ও রাজধানীর বাড্ডার ফুঁজি টাওয়ারের সামনে সুমন শিকদার হত্যা মামলায় গত ৩১ অগাস্ট পলককে তিন দিন করে ৬ দিনের রিমান্ড দিয়েছিল আদালত।
অন্যদিকে মোহম্মদপুরের দোকানদার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ৮ দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।
রিমান্ড শেষে এদিন তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি নিয়ে তা মঞ্জুর করেন বিচারক।
আরো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার বনশ্রীতে মিজানুর রহমান হত্যা মামলায় এদিন ইনু, মেনন, পলক ও মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার এসআই সৈয়দ রুহুল আমিন। আর মেনন, ইনু ও পলকের পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।
বয়স্ক মানুষ বিবেচনায় ইনু ও মেননকে জামিন দিতে আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়ে শুনানি করেন আইনজীবী। তবে সেই আদেন নাকচ করে চারজনকেই গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক সাইফুর রহমান।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ শেষে বিকাল ৩টার দিকে দোকান খোলার জন্য বাসা থেকে বের হন মিজানুর রহমান (২৮)। ঠিক সেই মুহূর্তে পুলিশ ও বিজিবি যৌথভাবে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে।
আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করতে করতে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় প্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সময়ে র্যাব হেলিকপ্টার ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালাতে থাকে।
এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিজানুরের বাম পায়ের উরুতে গুলি লাগে এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই তিনি ফোনে তার স্ত্রীকে ঘটনার কথা জানান।
স্ত্রী, বোন ও ভগ্নিপতি দ্রুত মিজানুরকে বনশ্রীর অ্যাডভান্স হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
এরপর মিজানুরকে আগারগাঁওয়ের পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সেখানেও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিজানুর হত্যা মামলা ছাড়াও আরো দুই মামলায় সাবেক আইজিপি মামুনকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জুলাই বনশ্রীতে মাদ্রাসা ছাত্র আশিকুল ইসলাম হত্যা এবং ভাটারা থানার আরেক হত্যা মামলা আছে।