কমিটির আকার কী হবে, তা স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসে নির্ধারণ করার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
Published : 10 Aug 2024, 08:15 PM
ক্ষমতার পালাবদলে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সব থানার কার্যক্রম পুনরুদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে ‘নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি’ গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জেলা পুলিশ সুপার ও ওসিদের নির্দেশনা দিয়ে শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কমিটির আকার কী হবে, তা স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসে নির্ধারণ করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোই এই কমিটির প্রধান লক্ষ্য- এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি একটি 'অ্যাকশন প্ল্যান' এর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
আইনশৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যে বাহিনীর সদস্য ও কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথ টহলের মাধ্যমে হানাহানি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে কাজ করবে কমিটি, বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, কমিটির কার্যক্রমসংক্রান্ত একটি রূপরেখা সকল ইউনিটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
"এ রূপরেখা অনুযায়ী এলাকায় বিদ্যমান সামাজিক সংঘাত, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ নিরসনে নিবিড় ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেবে।"
নির্দেশনা অনুযায়ী, একই সঙ্গে স্থানীয় জনসাধারণের জীবন, সম্পদ, স্থাপনা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়সহ এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা নিয়মিত তদারকি কাজটি করবে এই কমিটি।
এলাকার মাদক, ইভটিজিং ইত্যাদি সমস্যা নিরসনে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সঙ্গে স্থানীয় বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলসমূহ ও দল-উপদলের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা নিরসন ও সম্প্রীতি স্থাপনের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
কারা এই কমিটির সদস্য হবেন, তাও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
গ্রহণযোগ্য আইনজীবী- বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, সিনিয়র সিটিজেন, সর্বজন সমাদৃত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের সভাপতি- সেক্রেটারি, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, নারী অধিকারকর্মী এবং এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কমিটি পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা, কেউ যেন কোনো প্রকারের উসকানি দিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করতে না পারে, সে জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং পুলিশ সদস্যদের আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘিরে দেশের থানায় থানায় উল্লাসিত জনতা হামলা চালায়। বহুসংখ্যক পুলিশ সদস্য এসব হামলায় হতাহত হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে থানা ছেড়ে চলে যান পুলিশ সদস্যরা।
অরক্ষিত থানার নিরাপত্তায় সেনা সদস্য ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে থানায় থানায় কিছু পুলিশ সদস্য ফিরছেন। ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে কার্যক্রম। তবে বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যরা কিছু দাবি রেখে সেগুলো পূরণসাক্ষেপে থানায় ফেরার শর্ত দিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকার রাজারবাগে আইজিপির উপস্থিতিতে বৈঠক হলেও সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্থানীয় থানাকেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানে নাগরিক কমিটি গঠনের নির্দেশনা এল।