যুদ্ধ থামার নিশ্চয়তা নেই, উৎপাদন বাড়ান: প্রধানমন্ত্রী

“মনে রাখতে হবে যে আমাদের সবসময় সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।”

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2023, 12:25 PM
Updated : 27 Feb 2023, 12:25 PM

ইউক্রেইন-রাশিয়ার যুদ্ধ কবে থামবে, সে নিশ্চয়তা না থাকায় জনগণকে উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে।

যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন সরকারপ্রধান।

সোমবার নিজ কার্যলয়ে বিসিএস কর্মকর্তাগণের ৭৪তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বাসস জানায়, কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার আহ্বানও জানান।

মানুষকে সঞ্চয়ী ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ সবকিছুর মূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে এবং যুদ্ধ কখন থামবে তা নিশ্চিত নয়।

“আমাদের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি অবস্থা মোকাবেলা করতে।”

নতুন কর্মকর্তাদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আপনাদের মনে রাখতে হবে যে আমাদের সবসময় সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।

“আমি চাই নতুন কর্মকর্তারা দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।”

বাংলাদেশের ‘এগিয়ে যাওয়ার’ বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এক সময় বিদেশি দেশগুলোর কাছে অবহেলিত ছিল। তার সরকারের ‘সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে’ এখন বিশ্ব মঞ্চে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দেশ।

গত ১৪ বছরে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি। ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর বিনা মূল্যে ঘর দেওয়ার বিষয়ে তার সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন। সারাদেশে একজন মানুষও যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে সেটি নিশ্চিত করার লক্ষ্যের কথাও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের একমাত্র লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে দেশবাসীর জন্য উন্নত ও সুন্দর জীবন নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আজকের অফিসাররাই হবে আগামী দিনের সৈনিক।

“সরকারের প্রণীত ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের কাজ করতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য এটির বাস্তবায়ন শুরু করেছে।”

‘সামরিক সরকার এলে দুর্নীতি বাড়ে’

সামরিক সরকার এলে দুর্নীতি বাড়ে- এই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণের কাছে তাদের (সামরিক সরকার) জবাবদিহি করতে হয় না।

“আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তাই আমরা কাজ করছি জনকল্যাণে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা শুদ্ধাচার নীতি নিয়েছি।”

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য সামনে নিয়েই আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেকে জনগণের সেবক মনে করতেন। কিন্তু অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় এসে সব ধ্বংস করে দেয়।”

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) রেক্টর মো. আশরাফ উদ্দিনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।