শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন।
Published : 08 Oct 2024, 03:34 PM
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে আরও ১২ দিন।
মঙ্গলবার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক আবু তাহের আগামী ২০ অক্টোবর শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন।
খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ দিন মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ছিল। শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন। এরপর আসামি পক্ষ থেকে তারিখ পেছানোর জন্য আবেদন করলে তা মঞ্জুর করে নতুন তারিখ ঠিক করেন বিচারক।
সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী এই মামলা করেন।
ঢাকার তেজগাঁও থানায় করা এই মামলায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরের দিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
সেখানে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, এম শামছুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, আকবর হোসেন, আবদুল মান্নান ভুইয়া এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আলী, আকবর হোসেনর স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব।
এর মধ্যে সাম্প্রতিক গণআন্দোলনে সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ‘মুক্তি’ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী। পরে হাই কোর্টে আপিলে সাজা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হওয়ার পর ছয় মাসের জন্য মুক্তি মেলে বিএনপি নেত্রীর। এরপর আরও পাঁচ দফা বাড়ানো হয় মুক্তির মেয়াদ।
এরপর সরকার পতনের পর পরদিন বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে ‘মুক্তি’ দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতিসহ আরও কয়েক ডজন মামলা রয়েছে।