আসামির তালিকায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মহিবুল হক এবং বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানের নামও এসেছে।
Published : 27 Jan 2025, 09:12 PM
তিন বিমানবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা করেছে দুদক।
এসব মামলার আসামির তালিকায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মুহিবুল হক এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানের নামও এসেছে।
সোমবার এসব মামলার তথ্য সাংবাদিকদের জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
একটি মামলা হয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণের (থার্ড টার্মিনাল) প্রকল্পে ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে।
এ মামলার ১০ আসামির তালিকায় আছেন- তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুহিবুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক ও সুপারিনটেনডেন্ট হাবিবুর রহমান।
আসামি করা হয়েছে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের মালিক লুৎফুল্লাহ মাজেদ, এমডি মাহবুব আনাম, প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলাম ও সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীকেও।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয় এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু প্রকল্পে বেআইনিভাবে সাব-কন্ট্রাক্টর হিসেবে যুক্ত করা হয় অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালকে।
প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ১৩ হাজার কোটি থেকে বাড়িয়ে করা হয় ২১ হাজার কোটি টাকা। আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে প্রকল্প থেকে ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
আরেকটি মামলা করা হয় একই বিমানবন্দরের সিএনএস-এটিএম সিস্টেমসহ র্যাডার স্থাপন প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে।
এ মামলায় ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার প্রথম আট আসামির নামও রয়েছে। বাকি দুজন হলেন সিএনএস মেইনটেনেন্স বিভাগের পরিচালক আফরোজা নাসরিন সুলতানা ও পরিচালক (পরিকল্পনা) এ কে এম মনজুর আহমেদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সর্বশেষ হিসাব অনুসারে প্রকল্পে ব্যয় হয় ৭৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আসামিরা স্থানীয় এজেন্ট অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে ২০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেন।
দুদক আরেকটি মামলা করেছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের টার্মিনাল ও রানওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে।
প্রথম মামলার প্রথম আট আসামির নাম এই মামলাতেও আছে। বাকি দুজন হলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব শফিকুল ইসলাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ইউনুস ভূইয়া।
চতুর্থ মামলায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি প্রকল্পে ২১২ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। এতে আসামি করা হয় ১২ জনকে। এই মামলাতেও তারিক সিদ্দিক, মুহিবুল হক, জনেন্দ্রনাথ সরকার, মফিদুর রহমান, আব্দুল মালেক ও হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।
আসামি করা হয়েছে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাহবুবুল আনাম ও লুৎফুল্লাহ মাজেদ, প্রকল্প পরিচালক মইদুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব শাহ জুলফিকার হায়দার (বর্তমানে উপসচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়) এবং সাবেক যুগ্মসচিব আনিছুর রহমানকেও (বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব)।
আসামির তালিকায় আছেন বেবিচকের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব ও শরিফুল ইসলামও।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা প্রকল্পের কাজে পরিকল্পিতভাবে ব্যয় বাড়িয়েছেন। অগ্রিম বিল নেওয়ার পর অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের কর্মীরা কাজ বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছেন বলেও এজাহারে বলা হয়।